সজনে পাতার উপকারিতা ও গুনাগুন
সজনে পাতার উপকারিতা কি হয়তো এটা আপনার অজানা ছিল। যা জানতে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকে আমরা আলোচনা করবো সজনে পাতায় কি কার্যকারিতা আছে ও কি কি উপাদান থাকে এবং এর উপকারিতা কি।
আজকের এই পোস্টে আরও জানবো সজনে পাতায় পাঁচ থেকে দশটি বড়ো অসুখের সমাধান দিয়ে থাকে সেগুলো কি কি। তাহলে দেরি করে জেনে নিই কি এমন রয়েছে সজনে পাতায়। সজনে পাতার বিশেষ গুনগুলো কি এবং কি কি রোগের জন্য সজনে পাতা খাওয়া যাবে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ সজনে পাতার উপকারিতা
- সজনে পাতার উপকারিতা
- সজনে পাতার ব্যবহার
- সজনে পাতার রসের উপকারিতা
- সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
- সজনে পাতার গর্ভাবস্থায় উপকারিতা
- ত্বক ও চুলের যত্নে সজনে পাতা
- সজনে পাতায় ডায়াবেটিস রোগীর উপকারিতা
- সজনে পাতার অপকারিতা
- সজনে পাতার গুড়া কোথায় পাওয়া যায়
- শেষকথা
সজনে পাতার উপকারিতা
সজনে পাতা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি। সজনে পাতায় পুষ্টি ও প্রোটিনে ভরপুর।
সজনে পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, আরো রয়েছে খনিজ পদার্থ।
যা মানব দেহের জন্য অনেক উপকারী। সজনে পাতায় রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা
দেহের কোষের রোগ প্রতিরোধকারী। এছাড়াও মানুষের দেহে রক্তের গুণগতমান বাড়িয়ে
দেয়। সজনে পাতায় শরীরের শক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সজনে পাতায় আছে
লেবুর চেয়েও সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি। দুধের থেকেও চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম।
গাজরের চেয়েও চার গুণ বেশি ভিটামিন এ। এবং কলার চেয়েও অনেক বেশি পটাশিয়াম
রয়েছে এই সজনে পাতায়। সজনে পাতায় অনেক প্রোটিন রয়েছে, যা শরীরে গিয়ে
ইনসুলিনের কাজ করে। আর সেখান থেকে ডায়াবেটিকসও নিয়ন্ত্রণে থাকে। পাতা খাওয়ার
ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আরো পড়ুনঃ রসুন খাওয়ার উপকারিতা
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে কেউ যদি সজনে পাতা দীর্ঘদিন খায় তাহলে ক্যান্সারের
সাথেও লড়তে পারে। সজনে পাতায় যে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি রয়েছে, সেটি শরীরে
এন্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আর শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি পেলে রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। সজনে পাতায় যে অ্যামাইনো এসিড থাকে, তাতে
ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীকেও ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়াতে সাহায্য করে। সজনে পাতা আরও
অনেক গুনাগুন রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী।
সজনে পাতার ব্যবহার
সজনে পাতার উপকারিতা পেতে মানুষ নানান কাজে সজনে পাতা ব্যবহার করে থাকে।
- রান্নার কাজে সজনে পাতা: মানুষ বিভিন্ন কাজে সজনে পাতা ব্যবহার করে থাকে তার মধ্যে একটি হলো রান্নার কাজ। সজনা পাতা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রান্না করা যায়। সজনে পাতা দিয়ে শাক তৈরি হয়। যেটি রান্না করে খেলে শরীরে অনেক পুষ্টি পায়। সজনে গাছের সজনে ডাটা দিয়ে ডাল রান্না করা হয়, যা ডালকে অনেক সুস্বাদু করে তোলে। আরো অনেক পদ্ধতিতে সজনা পাতা রান্না করা যায়।
- ত্বক ও চুলের যত্নে সজনে পাতা: সজনে পাতা ত্বক ও চুলের জন্য বেশ উপকারী। সজনে পাতার পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগালে ত্বকের ব্রন ও কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। আমার সজনে পাতার পেস্ট চুলের গোড়া শক্ত করতেও কাজ করে। এবং চুলকে বাড়িয়ে তোলে। সজনে পাতার পেস্ট তৈরি করে চুলে মাখাতে হবে, তাহলে ফলাফল জানতে পারবেন।
- স্বাস্থ্য উপকারে সজনে পাতা: স্বাস্থ্যের উপকারে সজনে পাতা সবচেয়ে বেশি উপকার। এটি বিভিন্ন রোগ দূর করতে সাহায্য করে। যেমন পেটের সমস্যা, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটির মতো সকল সমস্যার সমাধান করতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সজনে পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
সজনে পাতার রসের উপকারিতা
সজনে পাতার উপকারিতার পাশাপাশি সজনে পাতার রস বেশ উপকারি। সজনে পাতার রস খুবই
উপকারী। এটি মেধ ভুড়ি কমাতে সাহায্য করে। সজনে পাতার রস খুব সহজেই অতিরিক্ত মেদ
ভুড়ি কমাতে সাহায্য করে, এবং এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও কাজ করে। যারা অতিরিক্ত মেদ
কমাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের জন্য এক গ্লাস সজনে পাতার রস জাদুর মত কাজ
করবে। যার ফলাফল মাত্র ৭ দিনেই পাবেন।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা
সজনে পাতা শুধু মেদ কমাতেই সাহায্য করে না, এটি শারীরিক নানা অসুখ বিসুখ মুক্ত
করে। এটি শরিরের কোলন পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। শরীরের শক্তি যোগায় এবং মেদ
কাটিয়ে ফেলে খুব দ্রুত। এছাড়াও বিপাক তন্ত্রের কাজ সঠিক রাখা সহ ক্যালরি কমাতেও
দারুন কার্যকর এই সজনে পাতার রস। সজনে পাতার সমৃদ্ধ উচ্চমানের ফাইবারের
উপস্থিতিতে যা কিনা ক্ষুধা নিবারনে কাজ করবে। এছাড়াও সজনে পাতার রসের
অ্যান্টি অক্সিডেন্টের গুনাগুন ডায়াবেটিস ও কলেস্টোর কে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য
করে। আর তাই সজনে পাতাকে বলা হয়ে থাকে প্রাকৃতিক ঔষধ। এবং এর গাছকে জাদুকরি গাছ
হিসেবে আক্ষা দেয়া হয়। সজনে পাতায় আছে পালং শাকের চেয়ে ২৫ গুণ বেশি আইরন,
লেবুর থেকে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, কলার থেকে ১৫ গুণ বেশি পটাশিয়াম, এবং ডিমের
চেয়ে চার গুণ বেশি প্রোটিন। এছাড়াও সজনে পাতার রস বড় বড় অসুখের বিরুদ্ধে কাজ
করে।
সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
পুষ্টিতে ভরপুরের কারণে বিশেষজ্ঞরা সজনে পাতাকে পুষ্টির ডিনামাইট বলে থাকে। আবার
সজনে পাতার গাছকেউ পুষ্টির উৎস বলে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে সজনে গাছে রয়েছে ৩০০
রকমের প্রতিষেধক। আপনি যদি সজনে পাতার গুড়া গ্রহণ করতে পারেন তাহলে উপকারিতা
পাবেন, যে আপনি কল্পনা করতে পারেন না। সজনে পাতার গুড়াকে সুপার ফুডও বলা হয়। এর
পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা প্রচুর। যা এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য
করে।
আর যদি আপনার খাদ্য তালিকায় সজনে পাতার গুঁড়া থাকে তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা
নিয়ন্ত্রণে থাকে। সজনে পাতায় থাকে ক্লোরোজনিক এসিড। এটিতে রক্তেমরে শর্করার
মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। হৃদরোগের কারণ কোলেস্ট্রল থাকায় আর এই কলেস্ট্রল সজনে
পাতার গোড়ায় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় অনেকটাই। ত্বক
ও চুল ভালো রাখতে সজনে পাতার গুড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিছুদিন যদি
আপনি সজনে পাতার গুড়া খান,
তাহলে ত্বক ও চুলের উপকারিতা নিজেই দেখতে পাবেন। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি
অক্সিডেন্ট ও পুষ্টির কারণে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে সজনে
পাতার গুঁড়া মরে যাওয়া চুলকে তাজা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও সজনে পাতার গুড়া
খাওয়ার ফলে লিভার ভাল থাকে। এছাড়াও গ্যাস পেট ব্যথা এ সকল ধরনের অসুক সারাতে
সজনে পাতার গুড়া কার্যকরী। তাই আপনার খাদ্য তালিকায় সজনে পাতা বা সজনে পাতার
গুড়া অবশ্যই রাখা প্রয়োজন।
সজনে পাতার গর্ভাবস্থায় উপকারিতা
সজনে পাতার উপকারিতা এত পরিমাণ বেশি যে গর্ভাবস্থায় থাকা মায়েদের জন্যও প্রচুর
কার্যকরী। মাল্টিভিটামিন গুন সমৃদ্ধ সজনে পাতাকে নিরামিষ খাদ্য হিসেবেও গণ্য করা
হয়। আমাদের দেহে ২০ শতাংশ প্রোটিন, যা বিভিন্ন অ্যামাইনো এসিড দারা পরিপূর্ণ।
মানুষের দেহের অ্যামাইনো এসিডের প্রায় সব কয়টি সজনে পাতায় পাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় দেখা গেছে যে একজন গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম
ও আয়রনের
ঘাটতি পূরণ করতে দৈনিক সজনে পাতা খাওয়া আবশ্যক। কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়া
সজনে পাতা মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। সন্তান প্রসবের পরে
লবণ পানিতে সিদ্ধ করা সজনে পাতা ঘি দিয়ে খেলে, মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ
বাড়াতে সাহায্য করে। সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকে। প্রচন্ড মাথা ব্যাথা
হলে সজনে পাতা ও গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে মাথায় লাগালে মাথাব্যথা কমে যায়। ওপেন
কাশি নিরাময়ে সজনে পাতা কার্যকরী।
সজনে পাতার রসের সাথে এক চামচ মধু নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যাবে। পেটের বিভিন্ন
জটিলতাই বিশেষ কাজ করে থাকে সজনে পাতা। সজনে পাতাতে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম,
ক্যালসিয়াম ফাইবার, অনেক কিছু রয়েছে তাই গর্ভাবস্থায় সজনে পাতার অনেক উপকারিতা
আসে। সে সময় অনেক পুষ্টির দরকার হয়, যার সজনে পাতা পূরণ করতে পারে। তাই
গর্ভাবস্থায় সজনে পাতার বেশ উপকারিতা রয়েছে।
ত্বক ও চুলের যত্নে সজনে পাতা
সজনে পাতার উপকারিতা ব্যাপক যা ত্বক ও চুলেও কাজ করে ।
- ত্বকের যত্নে সজনে পাতা: সজনে পাতায় ভরপুর এন্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ থাকে অনেক বেশি, এটি মুখের বা ত্বকের রিংকেল, কালো কালো দাঁতগুলো দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও সজনে পাতায় এমন কিছু গুনাগুন রয়েছে যা ত্বকের উজ্জলতা বা স্কিন বাড়াতে সাহায্য করে। এর জন্য সজনে পাতার ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর তা ধুয়ে ফেলুন। তাহলে ফলাফল পেয়ে যাবেন।
- চুলের যত্নে সজনে পাতা: সজনে পাতা যেমন স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী, তেমনি চুলের জন্য বেশ উপকারী। সজনে পাতায় রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এসব উপাদান স্বাস্থ্যকর এবং চুলের জন্য বেশ উপকারী। সজনে পাতা খাওয়াই চুলের গড়া ভেতর থেকে শক্ত করে তোলে। এবং চুলকে বৃদ্ধি করে। সজনে পাতায় থাকা ভিটামিন সি চুলের খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
- ব্যবহার পদ্ধতি: সজনে পাতার রস বা সজনে পাতা বেটে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর এটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের কালো দাগ ও ছোপ দূর করবে। কিছু সজনে পাতা বেটে তার রস গুলো মাথায় লাগিয়ে দিন। এরপর আধা ঘন্টা পর তা ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের গোড়া শক্ত, বৃদ্ধি, ও উজ্জ্বল করবে। এভাবেই ত্বক ও চুলের যত্নে সজনে পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
সজনে পাতায় ডায়াবেটিস রোগীর উপকারিতা
সজনে পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সজনে পাতা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই সজনে পাতার গাছকে
ভেষজক উদ্ভিদ বলা হয়। প্রায় ৩০ জন মহিলার গবেষণায় দেখা গেছে, মহিলারা তিন মাস
ধরে প্রতিদিন সাত গ্রাম করে সজনে পাতা খেলে ১৩% ব্লাড সুগার কমে আসে। আবার ছয় জন
মানুষের গবেষণায় দেখা যায় প্রতিদিন ৫০ গ্রাম সজনে পাতা খেলে ২১% ব্লাড সুগার
কমে।
এক কথায় বলা যায় সজনে পাতা ব্লাড সুগার কমাতে বা ডায়াবেটিস কমাতে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখে। সজনে পাতায় থাকে ৩৩ শতাংশ প্রোটিন, ৩৩ শতাংশ ফাইবার ও ৩৩ শতাংশ নেট
কার্বোহাইড্রেট। ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় প্রোটিন থাকলে ব্লাড সুগারকে
আস্তে আস্তে বাড়ায় যেটি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ভালো। আবার পৌষ্টিকতন্ত্র ফাইবার
কে ভাঙতেই পারে না, ফাইবার একপ্রকার কার্বোহাইড্রেট হলেও ফাইবার থেকে আপনার কোন
ব্লাড সুগার বাড়বে না।
সুগার নিয়ন্ত্রণে ফাইবারের তুলনা হয় না। সজনে পাতায় ৬৬ শতাংশ প্রোটিন ও ফাইবার।
তাই ডায়াবেটিস রোগির খাদ্য তালিকায় সজনে পাতা বেশ কার্যকরী। অনেকেই ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণ ঘরোয়া উপায়ে এই সজনে পাতা ব্যবহার করে থাকে। সজনে পাতাতে থাকা
প্রোটিন, ফাইবার, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, আইসোথাইয়োসানেট এসব উপাদান থাকে যা
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। তাই সজনে পাতা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বেশ
উপকারি।
সজনে পাতার অপকারিতা
সজনে পাতার উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। কিছু সজনে পাতার
অপকারিতা লক্ষ করা যায়। যেমন এলার্জি, অনেকেরই সজনে পাতায় এলার্জি থাকতে পারে।
বা ত্বকের জন্য ব্যবহার করলে, ত্বকে রেস বা এলার্জির মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই মুখে লাগানোর আগে এলার্জি পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো। আবার গর্ভাবস্থায়
মায়েদের জন্য সজনে পাতা যেমন উপকারী আবার কিছু ক্ষতিকর দিক থাকতে পারে।
যেমন জরায়ুর সংকোচন ঘাটাতে পারি। আবার অনেকেই অনেক ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকেন, সজনে
পাতা খাওয়ার ফলে ওষুধের গুনাগুন মিশ্রিত হয়ে তার কার্যকারী কমে যেতে পারে। তাই
ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সজনে পাতা খাওয়া দরকার। আবার সজনে পাতা কার্যকারি মনে
করে, বেশি পরিমাণ সজনে পাতা খাওয়ার ফলে পেটে অস্বস্তি বোধ বা গ্যাস বা
ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সজনে পাতা খাওয়া
লাগবে।
আবার যাদের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় তাদের সজনে পাতা না খাওয়ায় ভালো। এতে রক্তের
চাপ আরো কমিয়ে দেয় ফলে রক্ত স্বল্পতা রোগীর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যা
মেনে পাতা খেলে সমস্যায় পড়তে হবে না। নির্দিষ্ট পরিমাণ এবং নিয়মিত সজনে পাতা
খেলে অপকারিতের চেয়ে উপকারিতাই বেশি। ফলে সজনে পাতা খাওয়া যাবে তবে নিয়ম
মাপিক। সজনে পাতা খাওয়ার জন্য উক্ত সমস্যাগুলো মেনে চলুন।
সজনে পাতার গুড়া কোথায় পাওয়া যায়
সজনে পাতার গোড়ায় অনেক উপকার। একবার খেলে আপনি তার নিজেই টের পাবেন। সজনে
পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মতো নানা প্রকার কার্যকরী উপাদান। আর এটি
সেবনে দেহের জন্য শরিরের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি জিনিস। তাই সজনে পাতার গুড়া
আপনি খেতে পারেন। হয়তো আপনি তা পাচ্ছেন না, এ কারণেই আপনার খাওয়া হচ্ছে
না।
তাহলে চলুন জেনে আসি সজনে পাতার গুড়া কোথায় কোথায় পাওয়া যায়। সজনে পাতার
গুড়া বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যায় বিশেষ করে ওষুধের দোকানে। ফার্মেসি দোকান
গুলোতে গেলে আপনি অনায়াসে সাজনে পাতার গুড়া পেয়ে যাবেন। এছাড়াও বিভিন্ন
গ্রামীণ বাজারে কৃষকেরাও সজনে পাতার গুড়া বিক্রি করে থাকেন।
আবার অনলাইন বাজার থেকেও, তুমি যেমন ই-কমার্স, দারাজ আলিবাবা ডট কম থেকে সজনে
পাতার গোড়া অর্ডার করে কিনতে পারেন। সজনে পাতার গুড়ার মূল্য প্রতি কেজি প্রায়
৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। আপনার উপকারের জন্য আর দেরি না করে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করতে
পারেন সজনে পাতার গুড়া। তাহলেই বুঝে নিবেন এর কার্যকরী গুনাগুন।
শেষকথা
সজনে পাতার নানান উপকারিতা নিশ্চয়ই আপনারা এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন। তাই বলা যায়
সজনে পাতার অপকারিতার চেয়ে উপকারিতা অনেক পরিমান বেশি। সজনে পাতায় যেসব উপাদান
রয়েছে, দেহের জন্য প্রতিটি উপাদান কার্যকরী। তাই সজনে পাতার গাছকে ঔষধি গাছ
ভেষজক উদ্ভিদ বলা হয়ে থাকে। আবার সজনে পাতাকে সুপার ফুড নামেও মানুষ চিনে থাকে।
দেহের জন্য প্রচুর উপকারী সজনে পাতা।
আশা করি সজনে পাতার বিভিন্ন উপকারিতা নিয়ে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের তথ্য
দিয়ে উপকৃত করতে পেরেছি। আরো নানা ধরনের স্বাস্থ্য উপকারী লাইফ স্টাইল তথ্য পেতে
আমাদের ওয়েবসাইটকে উৎসাহিত করুন। এবং আপডেট কোন তথ্য পেতে আমাদের সাথেই থাকুন
ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url