ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করনীয়

ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করনীয় তা জানতে আপনি সঠিক আর্টিকেলে প্রবেশ করেছেন। বর্তমান সময়ে ছোট বাচ্চাদের চুলকানি বা রেস বের হয়ে এলার্জির মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই আমাদের আগেই এই সমস্যার সমাধান গুলো জানার প্রয়োজন।
ছোট-বাচ্চাদের-এলার্জি-হলে-করনীয়
আর ছোট বাচ্চাদের এলার্জি সমস্যার সমাধান করতে আমরা এই আর্টিকেলে পাঁচ থেকে দশটি ঘরোয়া উপায় অ্যালার্জি ভালো করার তথ্য তুলে ধরেছি। যেসব তথ্য আপনার খুবই উপকারে আসবে। চলুন দেরি না করে তাহলে জেনে আসি কি কি সেই উপায় গুলি।

পেজ সূচিপত্রঃ ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করনীয়

ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করনীয়

ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করনীয় তা প্রতিটি মা-বাবার জানা খুবই প্রয়োজন। ছোট বাচ্চাদের বিভিন্ন কারণে এলার্জি হতে পারে। যেমন কোন খাবার থেকে বা কোন ওষুধ থেকে বা পশু পাখির লোম। এছাড়াও বাচ্চারা খেলাধুলা করতে গিয়ে অনেক জীবাণু বা ধুলাবালির কারণেও এলার্জি হতে পারে। আর এলার্জি হলে বিশেষ কিছু করণীয় থাকে যা সবাই জানি না, ফলে এলার্জির মারাত্মক আকার ধারণ করে।

প্রথমেই আমাদের এলার্জি চিহ্নিত করতে হবে। যে এলার্জি কোন কারনে হলো। এটা না বুঝলে সঠিক চিকিৎসাও নেওয়া যায় না। তারপরে আমাদের ওই কারণ অনুযায়ী ঔষধ দিতে হবে। এতেও যদি অ্যালার্জি না কমে আসে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বাচ্চাকে ওষুধ সেবন করানো প্রয়োজন। এবং যেগুলো জিনিসপত্র থেকে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেগুলো জিনিসপত্র বাচ্চাদের থেকে দূরে রাখুন। 

এবং আপনার বাচ্চাকে সুন্দর একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন। ময়লা ধুলি বালি থেকেও কিন্তু এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনার বাচ্চার যদি এলার্জি কিছুদিন পর পর হতে থাকি, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এলার্জি পরীক্ষা করে এর সঠিক চিকিৎসা নিতে পারেন। ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে এসব নিয়ম নীতিগুলো মেনে চললে অনেকটাই এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।

বাচ্চাদের এলার্জির লক্ষণ গুলো কি কি

বিভিন্নভাবে এলার্জির ধরন গুলো লক্ষ্য করা যায় আমরা অনেকেই বুঝিনা। এলার্জির লক্ষন গুলো বুঝতে পারলে দ্রুত খুব সহজেই আমরা এলার্জির চিকিৎসা নিতে পারবো। শরিরের মধ্যে লাল লাল চাঁকা চাঁকা হয়ে ফুলে ওঠা এটি এলার্জির লক্ষন। আবার সারা শরির যদি চুলকায় বা র‌্যাশ বের হয় তাহলে বুঝে নিতে হবে এটি এলার্জির লক্ষন। আবার যদি ছোট বাচ্চার শ্বাস নিতে কষ্ট হয় তাহলে এটাও এলার্জির একটি লক্ষণ। 

আবার এলার্জির কারনে চোখ চুলকাতে পারে ও চোখ লাল হয়ে যেতে। এছাড়া বিভিন্ন খাবার খাওয়ার ফলেও এলার্জি হতে পারে। এসব লক্ষণ গুলো দেখা দিলে আমাদের দ্রুত বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তা না হলে গুরুত্বর সমস্যা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। এলার্জির এসব লক্ষন দেখা দিলে উপস্থিত অ্যান্টিহিস্টামিন ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহলে কিছু সময়ের জন্য আরাম হতে পারে।

বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করনীয় তা আমরা ঘরোয়া উপায়ে সমাধান করতে পারি। এলার্জি প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটা হচ্ছে এক্সান থিমা ও আরেকটি হচ্ছে এনআইএন থিমা। এক্সান থিমা হচ্ছে যেটাকে আমরা বাহির থেকে দেখতে পাই। যেমন অনেকেরই শরীরের লাল লাল চাকা চাকা হয়ে ফুলে ওঠে এটা আমরা দেখতে পাই, এটাকে বলে এক্সান  থিমা। আর এনআইএন থিমা হচ্ছে যেটাকে আমরা চোখে দেখতে পাই না। 
বাচ্চাদের-এলার্জি-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়
যেমন আপনার শ্বাসনালীতেও এলার্জি হতে পারে, এটাকে আমরা এনআইএন থিমা বলে থাকি। আর এর জন্য আমাদের কাশি হতে পারে বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আর ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এলার্জি ভালো করতে, ওষুধের চেয়ে ঘরোয়া উপায়ে সমস্যার সমাধান করা সবচেয়ে ভালো। ঘরোয়া উপায়ে ছোট বাচ্চাদের এলার্জি ভালো করতে হলে আপনাকে সর্বপ্রথম ধৈর্যশীল হতে হবে। এবং এলার্জি ভালো করতে আপনি নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন। 

নিম পাতা যদি পানিতে সিদ্ধ করে তার নির্যাস আপনার বাচ্চার শরীরে ব্যবহার করা হয়, তাহলে এলার্জির জন্য চমৎকার একটি ফলাফল পাওয়া যাবে। নিম পাতার পাশাপাশি আবার পুদিনা পাতাও বেশ কার্যকর এলার্জি সারাতে। পুদিনা পাতা পানিতে গরম করে সেই পানি যদি আপনার বাচ্চাকে পান করাতে পারেন তাহলে গলার মধ্যে যে এলার্জি ভাব থাকে সেটি সারাতে সাহায্য করে। আবার গরম পানির সাথে খানিকটা মধু মিশিয়ে খেলেও এলার্জি সারাতে বেশ কার্যকর।

রক্তের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

এলার্জি খুব পরিচিত একটি সমস্যা যা সবার শরীরে দেখা দিতে পারে। এলার্জি কোন শরীরের অংশ নয়, কিন্তু কিছু বহিরাগত বিষয়ের প্রতি শরীরের এক ধরনের  প্রতিক্রিয়ায় হচ্ছে এলার্জি। এলার্জি বলতে আমরা শুধু বুঝি  শরীরে লাল লাল হয়ে চাকা চাকা হয়ে যায় এটাই মনে হয়  এলার্জি। কিন্তু এর বাহিরে অনেক ধরনের এলার্জি রয়েছে কিন্তু আমরা তা বুঝতে পারি না। আমাদের শরীরের রক্তেও কিন্তু এলার্জি হতে পারে। 

রক্তের এলার্জি ঘরোয়া উপায়ে দূর করতে হলে কিছু নিয়মকানুন ও কিছু পুষ্টিকর খাবার সেবন করতে হবে। লেবু ও মধু খাওয়ার ফলে রক্ত জমাট বাড়তে দেয় না, ফলে এটি রক্তের এলার্জিকে দূর করতে সহায়তা করে। আবার আপনি যদি দৈনিক এক চামচ করে অলিভ অয়েল খান সেটাতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে রক্তে এলার্জি হতে দেয় না। আবার আদা বা আদা চা যদি খান এটাতেও রক্ত সঞ্চালন করতে সহায়তা করে।

রক্তে এলার্জি ঠেকানোর জন্য আমাদের বেশি করে ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যেমন পালং শাক, সবুজ শাকসবজি এগুলোতে অত্যন্ত পরিমাণে ভিটামিন কে থাকে। এরপরেও যদি আপনার কোন সমস্যা হয় তবে খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন। এভাবেই ঘরোয়া উপায়ে রক্তে এলার্জি দূর করা সম্ভব। তাই আমাদের সব সময় এগুলো বিষয়গুলোকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।

এলার্জি দূর করার প্রাকৃতিক উপায়

এলার্জি হলে প্রাকৃতিক উপায় অনেক ভাবে এলার্জি ভালো করা যায়, তা হয়তো আমাদের অনেকেরই অজানা। তাই শুধু শুধু ডাক্তারের কাছে গিয়ে টাকা নষ্ট না করে আমরা চাইলে প্রাকৃতিক উপায় অ্যালার্জি সারাতে পারি। ব্যবহার করার মাধ্যমে এলার্জি দূর করা যায়। হলুদে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুনাগুন যা এলার্জির মত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। আবার আদা বা আদা চা খেলেও গলা খুসখুসে ভাব বা চুলকানি ভাব দূর করতে সাহায্য করে। 

মধুতে প্রাকৃতিক এন্টি ইনফ্লেমেটরি থাকায় এলার্জি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই মধু। এবং শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি দিতে হবে। প্রতিদিন প্রায় আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে তাহলে আপনার এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে। আরো বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। তাই উক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে প্রাকৃতিক উপায়ে এলার্জি দূর করা সম্ভব। 

বাচ্চাদের এলার্জি দূর করায় ক্রিম ব্যবহার

বাচ্চাদের অনেক রকমের এলার্জি নাশক ক্রিম পাওয়া যায়। যেটা ব্যবহার করলে অ্যালার্জি আস্তে আস্তে কমে আসে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এসব কার্যকর ক্রিমের কথা। সবাই ভুলভাল ক্রিম ব্যবহার করে তাকে ক্ষতি করে ফেলি। আমরা আজকে কয়েকটি ক্রিম এর কথা জানব যেগুলো ব্যবহার করলে ক্ষতি হবে না। বেশ কয়েকটি ক্রিম পাওয়া যায় যেমন হাইড্রোকরটিজোন ক্রিম, অ্যান্টিহিস্টামিন ক্রিম, Calamine lotion ইত্যাদি। 
আপনার উপকারে আসবে এমন পোষ্টঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উপায় ও করনীয়

এসব ক্রিম ত্বকের চুলকানি বা লাল ভাব কমাতে বিশেষভাবে কাজ করে। আবার  এলার্জির মত সমস্যা ভালো করে দেয়। আমার ছোট বাচ্চাদের জন্য যদি তাদের ত্বকে রিয়াকশন করে, তাহলে তাদের জন্য নারিকেল তেল বা জিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো এলার্জি ভালো করতে ও এর থেকে আরাম পেতে সাহায্য করে। এতে করে ছোট বাচ্চাদের জন্য তাদের ত্বকে কোনরকমে রিয়েকশন হবে না।

বাচ্চাদের এলার্জির কিছু ঔষধ এর নাম

ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করনীয় তা আমাদের অনেক সময় মাথায় আসে না। তাই আমরা অনেক সময় ছোট বাচ্চাদের ভুলভাল ওষুধ খাইয়ে থাকি। এটা মোটেও করা ঠিক না এতে ছোট বাচ্চা আরো ক্ষতি হতে পারে। তাই আমাদের বাচ্চাদের জন্য বেশ কিছু সঠিক ঔষধ রয়েছে তা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। যেমন  সিরটিজিন, লরাটাডিন, ডেক্সামেথাসোন, মন্টেলুকাস্ট, এলার্জি সিরাপ  ইত্যাদি। এসব  ঔষধ ছোট বাচ্চাদের ও খাওয়ানো যাবে। 
বাচ্চাদের-এলার্জির-কিছু-ঔষধ-এর-নাম
ট্যাবলেট জাতীয় ওষুধ যদি না খাওয়ানো যায় তবে তার জন্য রয়েছে এলার্জির সিরাপ। ফার্মাসিতে অনেক ধরনের এলার্জির সিরাপ পাওয়া যায়। এগুলো শিশুর জন্য অনেক ভালো কাজ করে এলার্জির জন্য। তাই ছোটদের বাচ্চাদের কে ভুলভাল ওষুধ না  দিয়ে, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ ব্যবহার করুন। তা না হলে ভুলভাল ওষুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে বাচ্চার অনেক মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। উক্ত ওষুধগুলো খেলে এলার্জি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই থাকে।

শেষকথা 

ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করনীয় তা নিশ্চয়ই এতক্ষণে আপনারা বুঝে গেছেন। ঘরোয়া উপায় কিভাবে এনার্জির মোকাবেলা করতে হয় তা আমরা এই আর্টিকেলে এতক্ষণে আলোচনা। আশা করি আপনি পুরো আর্টিকেলটি বুঝতে পেরে। এবং আপনার এই আর্টিকেলটি পড়ে অবশ্যই উপকারে আসতে পারে। এই ধরনের পোস্ট আমরা প্রতিনিয়তই এই ওয়েবসাইটেই করে থাকি। তাই আমাদের এই ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url