কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা কিভাবে করা হয়

কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা কিভাবে করতে হয় এবং কি কি কাজে আসে কলার খোসা এই বিষয়ে জানতে এই আর্টিকেলটি আজকে আপনার জন্য। করাতে যেমন উপকার রয়েছে তেমনি কলার খোসা থেকেও অনেক উপকার পাওয়া যায়।
কলার-খোসা-দিয়ে-রূপচর্চা
আজকের এই আর্টিকেলে কলার খোসার ১০টি উপকারের কথা বলব। এবং কলার খোসা দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করতে হয় তার বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই আপনি যদি কলার খোসার বিষয়ে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আজকে আপনি সঠিক আর্টিকেলে প্রবেশ করেছেন।

পেজ সূচিপত্রঃ কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা

কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা

কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা খুবই কার্যকরী। যাদের স্কিন পাতলা বা ড্যামেজ হয়ে যাচ্ছে এবং যাদের স্কিন রোদের তাপমাত্রায় জ্বালাপোড়া করে তাদের জন্য খুবই কার্যকরী একটি উপাদান কলার খোসা। একটি কলার খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে কয়েকটি ভাগে কেটে ফেলুন। এরপরে আপনি কলার খোসা দিয়ে আপনার মুখের স্কিনে মাসাজ করতে পারেন। আপনি চাইলে এটি প্রতিদিনও করতে পারেন। এটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।

আপনার ত্বকে যদি কোন কালো দাগ থাকে সেটি দূর করতে সাহায্য করে। এবং স্কিনকে ঠান্ডা করে তোলে যার মাধ্যমে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও কলার খোসার পাশাপাশি আপনি কলা দিয়ে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন। এর জন্য একটি কলা ও কিছু পরিমাণ কাঁচা দুধ একসাথে ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এবং সেই পেস্ট মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পরে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে ত্বকের যত্নে কলা ও কলার খোসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কলার খোসা মুখে মাখলে কি হয়

কলার খোসা মুখে মাখলে কি হয় তা কি আপনারা জানেন? প্রায় অধিকাংশ মানুষের কাছেই এই তথ্যটি অজানা। কালার খাসা মুখে ব্যবহার করা ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা অধিক পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। আপনার চোখের নিচে যদি ফুলে যায় এবং আপনি যদি আপনার মুখে ব্রণ দূর করতে চান তাহলে  আপনি কলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন। কলার খোসা ত্বকের উপকারে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কাজ করে।

কলার খোসায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম যেটি ত্বকের  ময়েশ্চারাইজ বাড়াতে সাহায্য করে। এবং ত্বকের হাইড্রেট ধরে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও মুখের সকল কালো দাগ ও ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে কলার খোসা। তবে কলার খোসা মুখের লাগানোর আগে আপনি অবশ্যই পরীক্ষা করে নিবেন কলার খোসায় আপনার এলার্জি আছে কিনা। তা না হলে, আপনার ত্বকে চুলকানি ভাব দেখা দিতে পারে।

চুলের যত্নে কলার খোসার ব্যবহার

চুলের যত্নে কলার খোসার ব্যবহার  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লম্বা, ঘন, কালো,  সিল্কি চুল পেতে চান, তাহলে আজকে থেকেই আপনি চুলের যত্নে কলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য আপনি একটি কলার খোসা পরিষ্কার করে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে নিন। এবার খোসা গুলোকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির মধ্যে নিয়ে তা জাল করুন। এবং পানি গরম হয়ে গেলে এক চামচ চা পাতা তার মধ্যে ছেড়ে দিন। এবং জাল করা হয়ে গেলে সেদ্ধ করা কলার খোসা গুলোকে নিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। 
চুলের-যত্নে-কলার-খোসার-ব্যবহার
এরপরে আপনি চাইলে তার মধ্যে এক চামচ এলোভেরা জেল মিশিয়ে নিতে পারেন যা চুলের জন্য খুবই উপকারী। এবং নারিকেল তেল এক চামচ মিশিয়ে নিতে পারেন। এবং গোসল করার আগে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত আপনি তা লাগিয়ে দিতে পারেন। এবং আধাঘন্টা অপেক্ষা করার পর শ্যাম্পু দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দুইবার এই কলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আপনি এর ফলাফল নিজেই পেয়ে যাবেন।

পাকা কলার খোসা মুখে মাখলে কি হয়

কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা সহ পাকা কলাও অনেক পুষ্টি গুনে ভরপুর। কলাতে রয়েছে ভিটামিন এ বি সি এবং ই। পাশাপাশি অনেক উপাদান রয়েছে কলাতে যেমন পটাশিয়াম, জিংক, আয়রন ইত্যাদি। পাকা কলাতে থাকা ভিটামিন এ ত্বকের ময়েশ্চারাইজ বাড়িয়ে দেয় এবং ব্রণ ও কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। সুন্দর চেহারা তৈরি করার পাশাপাশি অনেক স্বাস্থ্য উপকার করে থাকে এই পাকা কলা।

কলাতে মিনারেল ও ভিটামিন থাকায় ত্বকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে এবং শরীরকে ফিট রাখতে সহায়তা করে। শুষ্ক ত্বক দূর করতে পাকা কলার সাথে চিনি মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে তা মুখে মাখতে পারেন। এতে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। এবং ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে দেয় এবং ত্বককে সুন্দর করে। তাই স্বাস্থ্যের উপকারের পাশাপাশি ত্বকের জন্য পাকা কলা বেশ উপকারী একটি ফল।কলার খোসা চুলে কিভাবে ব্যবহার করব

কলার খোসা চুলে কিভাবে ব্যবহার করব 

কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার পাশাপাশি চুলের যত্নেও কলার খোসা ব্যবহার করা যায়। এবং চুলের যত্নে কলার খোসা কিভাবে ব্যবহার করা হয় এটা অনেকেরই অজানা। এর জন্য প্রথমে আপনি একটি কলার খোসা নিতে পারেন এবং দুই চামচ নারিকেল তেল নিবেন। এরপরে কলার খোসাটাকে পরিষ্কার করে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। এরপরে টুকরো করা খোসা গুলো ব্লেন্ডারের ভালোভাবে বেটে পেস্ট করে নিন। এবং দুই চামচ নারিকেল তেল তার সাথে মিশিয়ে দিন।

এবং এই পেস্টটি চুলের গড়া থেকে আগ পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে দিন। এবং ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে দিন। তারপর গোসল করার পূর্বে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল শক্ত ও সিল্কি হয়ে যাবে। এই পেষ্টটির সাথে আপনি চাইলে দুই চামচ মধু যোগ করতে পারেন। তাহলে চুলকে আরো ভিটামিন ও শক্তির দিতে সাহায্য করবে। এভাবেই চুলে পাকা কলা ও কলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন।

কলার খোসা কি ব্রণ দূর করে

কলার খোসা কি ব্রণ দূর করে এ প্রশ্ন হয়তো আপনারও রয়েছে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে যদি আপনি কলার খোসা বা কলার পেস্ট তৈরি করে ত্বকে ম্যাসাজ করেন তাহলে আপনার মুখের ব্রণ দূর করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি ত্বকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে। এর জন্য একটি কলার খোসা কেটে নিয়ে এক টুকরা খোসার উল্টো দিক করে তোকে ঘুষুন। এভাবে দশ মিনিট করে ঘুষতে থাকুন।

এবং মুখ না ধুয়ে সারারাত এভাবেই ঘুমিয়ে পড়বেন এবং সকালে উঠে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে যদি আপনি নিয়মিত আপনার ত্বকে কলার খোসা ব্যবহার করতে থাকেন, তাহলে আপনার মুখের ব্রণ দূর হয়ে যাবে নিমিষেই। কলার পাশাপাশি কলার খোসাতেও অনেক ভিটামিন রয়েছে তাই ত্বকের জন্য এটি খুবই উপকারী একটি উপাদান। তাই রূপচর্চায় আপনি কলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন।

কলার খোসা মুখে কতক্ষণ রাখবেন

কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা খুব কার্যকরী একটি মাধ্যম। কলার খোসা বিভিন্নভাবে মুখে ব্যবহার করা যায়। আর একেক পদ্ধতির জন্য একেক রকম সময় লাগতে পারে। যেমন আপনি যদি কলার খোসার পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান তাহলে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগিয়ে রাখতে পারেন। এটা করে আপনার  ত্বক অনেক উজ্জ্বল হয়ে যাবে। এর সাথে যদি আপনি এক চামচ মধু মিশিয়ে নেন তাহলে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে পারেন।

এবং শুধু কলার খোসা যদি ত্বকে ঘুষে থাকেন তাহলে সেটি অবশ্যই রাতে ঘুমানোর আগে লাগিয়ে রাখবেন। এবং সারারাত মুখে থাকার পরে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলতে পারেন। এভাবে লাগালে আপনার মুখের কালো দাগ, ব্রণ ও শুষ্ক ত্বককে উজ্জ্বল করে সুন্দর বানিয়ে তুলবে। তাই আপনি তো নিয়ম অনুযায়ী কলার খোসা মুখে ব্যবহার করতে পারেন।

কলা আর মধু একসাথে খেলে কি হয়

কলা আর মধু একসাথে খেলে কি হয় আপনি কি তা জানেন। পাকা কলা ও মধু দুটিই ঔষধি গুনসম্পন্ন খাবার। এবং দুটি খাবারই প্রচন্ড পরিমাণে পুষ্টিগুণে ভরা। কিন্তু আপনি কি এই দুইটি খাবার কখন একসাথে খেয়েছেন। পাকা কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এবং কলায় রয়েছে জিরো টিস্যু গঠনকারী উপাদান। এবং মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকগুন বাড়িয়ে দেয়। এবং শরীরের ভেতরে ও বাহিরে সমস্ত ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া দূর করে মধু।
কলা-আর-মধু-একসাথে-খেলে-কি-হয়
এবং এই মধু আর পাকা কলা যদি একসাথে খাওয়া হয় তাহলে শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের যোগান দেয়। এটি শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে কার্যকরী এ দুটি খাবার। এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও এটি রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়। এবং মধু ও কলা একসাথে খেলে শরীরের প্রচুর পরিমাণে শক্তি যোগায়। তাই চাইলে এ সকল উপকারের জন্য আপনিও মধু ও কলা খেতে পারেন।

শেষকথা

কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করতে হয় কিভাবে এতক্ষণে হয়তো আপনার কাছে পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে গেছে। কলা শুধু খাবার জন্য একটি ফল নয়। এটি স্বাস্থ্য উপকারী ও রূপচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি কলা সহ কলার খোসাও আজ থেকে ব্যবহার করা শুরু করতে পারেন। আশা করি আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। আপনার আরও অজানা তথ্য পেতে আমাদের এই অর্গানাইজ আইটি ওয়েবসাইট টিতে ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url