হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে আপনি আজকে সঠিক আর্টিকেলে প্রবেশ
করেছেন। আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ যদি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আজকের
এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
কারন আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তুলে ধরেছি হৃদরোগ কেনো হয় ও তা কিভাবে প্রতিকার
করা যায় তার ১০ রকম উপায়। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা জেনে আসি কেন হৃদরোগ হয়
এবং কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার
- হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার
- হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ গুলো কি কি
- মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের লক্ষণ
- হৃদরোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ
- হৃদরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো কি
- হৃদরোগ হলে কি কি সমস্যা হতে পারে
- হৃদরোগ প্রতিরোধে কি কি খাবার গ্রহন করতে হবে
- শেষকথা
হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার
হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার আমাদের সকলেরই জেনে রাখা ভালো। একটা সুস্থ মানুষও
যেকোনো সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে। তাই আমাদের সর্বদাই এই সকল
তথ্যগুলো জেনে রাখা ভালো। হৃদরোগে কোন সমস্যা হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়।
প্রথমত, আপনি কোন কাজ করতে গেলেই অল্পতে নার্ভাস ফেল বা হাঁপিয়ে যেতে পারেন।
এবং হাটার সময় বুকে ব্যথা করাটাও হৃদরোগের লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়।
এছাড়া কেউ যদি হৃদরোগে আক্রান্ত হয় তাহলে তার বুকের মধ্যে ধরপর করতে পারে।
আবার কারো কারো হাত পা ফুলে যায় অকারণেই, এটাও এক ধরনের হৃদরোগের লক্ষণ হিসেবে
ধরা হয়। আবার শ্বাসকষ্ট হওয়াটাও হৃদরোগের লক্ষণ। হৃদরোগ প্রতিরোধ করার জন্য
বেশ কিছু করণীয় রয়েছে যা আমাদের জানা উচিত। যাদের ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার
ও রক্তে উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল রয়েছে তাদের দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
আরেকটি পোষ্টঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
এই সমস্যাগুলো এড়িয়ে চলতে পারলে হৃদরোগের সমস্যা অনেকটাই কমে আসে। এরপরেও যদি
হৃদরোগে কেউ আক্রান্ত হয়ে যায়, তাহলে তাকে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসতে
হবে। এছাড়াও প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে হাঁটতে হবে। এবং উচ্চ কোলেস্টেরল জাতীয়
খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এবং বেশি বেশি সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। তাহলে
হৃদরোগের প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ গুলো কি কি
হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ গুলো কি কি, হৃদরোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে এগুলো আমাদের
অবশ্যই জানা উচিত। মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল হার্ট। এই
হার্টে তিনটি নালি থাকে। কোন কারনে যদি এই নালীগুলো জ্যাম হয়ে যায় তখন বুকে
ব্যথা শুরু হয়। আর তখন পরীক্ষা করে যদি কোন ত্রুটি দেখা দেয় তাহলে আমরা তাকে
বলে থাকি হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী। আর তাই আমাদের প্রতিনিয়ত এই হার্টকে ভালো
রাখা উচিত।
বিভিন্ন কারণে এই হৃদরোগ হতে পারে। এবং হৃদরোগ হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়।
সেগুলি হল, শ্বাসকষ্ট হওয়া, বুকে ব্যথা হওয়া, অস্বস্তি বা ক্লান্তি অনুভব
করা, পেটে অস্বস্তি বা গ্যাস হওয়া, হাত-পা ঝিনঝিন করে অবশ হয়ে যাওয়া, মাথা
ব্যথা ও রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া। এই লক্ষণগুলো হৃদরোগের লক্ষণ হয়ে থাকে। তাই
কারো যদি এসব লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের লক্ষণ
মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের লক্ষণ গুলোও সকলের জানা উচিত। অনেকেই জানে মহিলারা
হৃদরোগে আক্রান্ত কম হয় এবং পুরুষরা বেশি হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে এই
কথাটি একদমই ভিত্তিহীন। মহিলারাও কিন্তু অল্প বয়সে হৃদ রোগে আক্রান্ত হতে
পারে। কিন্তু পুরুষদের চেয়ে লক্ষণ গুলো ভিন্ন। মহিলাদের লক্ষণগুলো এমন যে
তারা বুঝতেই পারে না, আর না বোঝার কারণে অনেকেই হার্টফেল করে মারা যায়।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উপায় ও করনীয়
মহিলাদের ক্ষেত্রে বুকে উচ্চ পরিমাণে ব্যাথা হয় না এবং হালকা পরিমাণে পেটে
গ্যাসের মত ভাব হয়। এবং পিঠের দিকে একটু ব্যাথা অনুভূত হয়। আবার হঠাৎ করে
এই ব্যথাগুলো ভালো হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এরকম ব্যথা মহিলাদের জন্য হৃদরোগের
লক্ষণ। এছাড়া যদি বুকে ব্যথা হয়েও থাকে তাহলেও তাকে হৃদরোগের চিকিৎসা করাতে
হবে। এবং হার্টের মাত্রা সবসময় আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
হৃদরোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ
হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করেছি এই সেকশনে। হৃদরোগ একটি ঘাতক
ব্যাধি। দেশে এই ঘাতক ব্যাধি দিন দিন বাড়ছে এবং রোগীর সংখ্যাও হাসপাতাল গুলোতে
বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই জন্যই আমাদের সচেতন হয়ে এর প্রতিকার করা উচিত। রোগের
প্রতিরোধ রোগের চিকিৎসার থেকেও উত্তম। আর তাই আমাদের খাদ্যাভ্যাস গুলোকে
নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং চর্বি জাতীয় খাবার গুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে।
এবং আমাদের দিনে অন্তত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট হাঁটতে হবে। আবার অনেকেরই কিছু রিক্স
ফ্যাক্টর রয়েছে, যেগুলোর কারণে হৃদ রোগ হতে পারে। সেগুলোকে ঔষধ খাওয়ার
মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান ও উচ্চ
কোলেস্টেরল। এই সকল রিক্স ফ্যাক্টর গুলোকে সব সময় কন্ট্রোলে রাখতে হবে। তা না
হলে এই রিক্স ফ্যাক্টর গুলো হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তাই কেউ যদি ধূমপান করে থাকেন তাহলে সেটি কন্ট্রোল করার চেষ্টা করুন। এবং
বাকিগুলো আপনি ওষুধ খেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। এই সকল রিক্স গুলো যদি
এড়িয়ে চলতে পারেন তাহলে হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই থাকবে না। আবার যদিও
বুকে ব্যথা হয় বা শরীরের কোন অংশে ব্যথা হয়ে যায় তাহলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের
পরামর্শ নিয়ে আপনার হার্টকে পরীক্ষা করে নিন।
হৃদরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো কি
হৃদরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো কি তা আমার আপনার সকলের জানা অত্যন্ত প্রয়োজন।
হৃদরোগ একটি মারাত্মক ব্যাধি। যদি কারো হৃদরোগ হয় তাহলে অনেকেই সাথে সাথেই
মারা যায়। এর জন্য হৃদরোগের কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা রয়েছে যেগুলো বাসা থেকেই
শুরু করতে হবে। যদি আপনার হৃদরোগের লক্ষণ দেখা দেই তাহলে আপনি বাসাতেই প্রাথমিক
চিকিৎসা শুরু করে দিবেন। এর জন্য অ্যাসপ্রিন জাতীয় ঔষধ পাওয়া যায় এর চারটি
ট্যাবলেট আপনি সাথে সাথে খেয়ে নিবেন।
এবং খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এবং হৃদরোগের কিছু পরীক্ষা করে ইসিজি
করে হৃদরোগ পরীক্ষা করবে। এবং সেই অনুযায়ী আপনাকে ডাক্তাররা ঔষধ দিবেন। আবার
বাড়িতে আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন। প্রত্যেক বেলার খাবারগুলো
নিয়মিত খাবেন, চর্বি জাতীয় খাবার গুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। এবং সুষম
খাবার বেশি বেশি গ্রহণ করবেন তাহলে হৃদরোগ সহজে আক্রান্ত করতে পারবে না।
হৃদরোগ হলে কি কি সমস্যা হতে পারে
হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকারের পাশাপাশি এটাও জানা উচিত যে হৃদরোগ হলে আরো কি
কি সমস্যা হতে পারে। কিছু কিছু মানুষের এমনও হৃদরোগ হতে পারে যে সে চিকিৎসা
পাওয়ার আগেও মারা যেতে পারে। আবার আহাট হঠাৎ করেই পাম্পিং বন্ধ করে দেয়,
ফলে হার্টফিল হয়ে সে মারা যেতে পারে। আবার অনেকের হার্ট পাম্প করার স্পিড
বেড়ে যায় আর এই কারণেও হৃদরোগ রোগী যেকোনো সময় মারা যেতে পারে।
প্রয়োজনীয় একটি পোষ্টঃ ছোট বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করনীয়
আবার হৃদরোগের ফলে অনেকের বাল্ব এর সমস্যা হতে পারে। আবার অনেকের
হার্টের পর্দা ছিড়ে যেতে পারে। আবার কেউ কেউ দীর্ঘ সময় হৃদরোগে ভোগে। এর
ফলে প্রচন্ড কাশি হয়, বুকে ব্যথা হয়, শরীর দুর্বল হয়ে যায় ইত্যাদি। এর
জন্য আমাদের হৃদরোগ হলেই একে না পুষে রেখে খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে
সঠিক চিকিৎসা নেওয়া উচিত। তাহলে অনেকটাই ঝুঁকি কমে যায় হৃদরোগের।
হৃদরোগ প্রতিরোধে কি কি খাবার গ্রহন করতে হবে
হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার করতে আমাদের প্রতিনিয়তই পুষ্টিকর খাবার বেশি বেশি
খাওয়া উচিত। অনেকের হৃদরোগ হয় কিন্তু হার্ট ব্লক হয়ে যার কারণে। আর এই হার্ট
ব্লক হয় আপনার খাদ্যাভাসের জন্য। আপনি যদি ব্যায়াম না করেন, খাওয়া-দাওয়া
ঠিকঠাক না হয় বা উল্টাপাল্টা কিছু খান, তাহলে এর থেকে হার্ট ব্লক হয়ে যেতে
পারে। আর সেই কারণে আমাদের প্রতিনিয়তই পরিমিত পরিমাণে সুষম খাবার বেশি বেশি
গ্রহণ করা উচিত।
এমন কিছু খাবার রয়েছে যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এর পাশাপাশি
আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে, হাইপারটেনশন প্রতিরোধ হবে, হার্টের ব্লক
হবে না। এর জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় ফল ফুল বেশি রাখতে হবে। এছাড়াও সবুজ
শাকসবজি, ও প্রোটিন সমৃদ্ধ মাছ খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। এবং গরুর, খাসির মাংস
এবং চর্বি জাতীয় যেকোন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
তবে মুরগির মাংস খাওয়া যেতে পারে। দুধ এবং দুধ জাতীয় তৈরি খাবার আপনি চাইলে
খেতে পারেন। ফলমূল সালাত এইগুলো খাবার বেশি করে খেতে হবে। এছাড়াও শসা, গাজর
এইগুলো বেশি বেশি খেতে পারেন। এতে করে আপনার হার্ট কে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
এই খাবারগুলো মেন্টন করে খেতে পারলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাই
এই খাবারগুলো আমাদের বেশি বেশি করে খাওয়া উচিত।
শেষকথা
হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার নিয়ে এতক্ষণে যা আর্টিকেলে পড়েছেন তা হয়তো এতক্ষণে
বুঝতে পেরেছেন। হৃদরোগ মারাত্বক একটি রোগ, তাই উক্ত লক্ষনগুলো দেখা দিলে আপনি এর
প্রতিকার কিভাবে নিতে হবে তা এতক্ষণে জানলেন। এ সকল প্রতিকার গুলো আপনি মেনে
চললে আপনি নিজে থেকেই হৃদরোগ প্রতিকার করতে পারেন। এছাড়াও সব সময় আপনি পুষ্টিকর
খাবার বেশি খাবেন।
এই আর্টিকেল থেকে হয়তো আপনি একটু হলে উপকৃত হয়েছেন। আর আমাদের এই অর্গানাইজ
ওয়েবসাইটটিতে সব সময় আপনাদের নতুন আপডেট তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করে থাকি। আপনাদের
যদি আরো অজানা কোন তথ্য থেকে থাকে তাহলে আমাদের যোগাযোগ পেজে গিয়ে আমাদের জানাতে
পারেন। এবং আমাদের ওয়েবসাইটটিতে ফলো দিয়ে রাখতে পারেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি
ভালো, থাকবেন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url