বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কি কি তা জেনে নিন

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কি তা জানতে আজকে আপনি সঠিক আর্টিকেলে প্রবেশ করেছেন। যেসব বাচ্চাদের দাঁত ওঠা শুরু হয় তাদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু করণীয় রয়েছে যা অনেক মা-বাবায় জানে না। আর সেই না জানার কারণে বাচ্চাদের অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়।
বাচ্চাদের-দাঁত-ওঠার-সময়-করণীয়
আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় মা-বাবার কি দায়িত্ব এবং কি করতে হবে তার বেশ কিছু টিপস। যদি আপনার অজানা থাকে তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য।

পেজ সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয়

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয়

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কি তা প্রত্যেক বাচ্চার মা ও বাবার জানা দরকার। কারণ এই সময় বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। অনেক জ্বর আসতে পারে। আর শিশুর যখন প্রথম দাঁত উঠে তখন সবারই ভালো লাগা কাজ করে। কিন্তু শিশুর দাঁত ওঠার সময় তার অনেক কষ্ট হয়। আর সেজন্য তার বাবা মাকে বেশ সচেতন হতে হবে এবং শিশুর যত্ন নিতে হবে। সেজন্য বাবা মাকে শিশুর কষ্টের কথা চিন্তা করে তার সেবা করতে হবে।

যাতে করে শিশুর সেই কষ্ট কমে যায় এবং শিশুর আরাম হয়। বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় দাঁতে শিরশিরানি ব্যথা হয়। আর সেই কারণে আমাদের প্রয়োজন শিশুদের দাঁতে ঠান্ডা কিছু ব্যবহার করা। হালকা ঠান্ডা কোন কিছু বাচ্চার মাড়িতে দিলে বাচ্চার সেই ব্যথাটি কমে যেতে পারে। এবং বাচ্চাদের মাড়িতে হাত পরিষ্কার করে একটু মাসাজ করতে পারেন। দিনে দুই থেকে তিনবার করলে ব্যথাটি কমে যেতে পারে।

বাচ্চার নতুন দাঁত ওঠার সময় তারা যেকোনো কিছু টিবানোর চেষ্টা করে। তাই তার হাতে গাজর বা শসা কেটে দিতে পারেন। এ থেকে তারা সেই দাঁত দিয়ে খাওয়া শিখবে। এবং কোন রাবার বা প্লাস্টিকের জিনিস হাতে দেওয়া যাবে না। তাহলে সেই রাবার বা প্লাস্টিকে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। এবং সবচাইতে যেটি বেশি দরকার সেটি হল মায়ের ভালোবাসা। এ সময় একটু বাচ্চাদের আগলে রাখবেন যত্ন নিবেন তাহলে সে হাসি খুশি থাকতে পারবে।

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণ

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণ কিছু দেখা দিলে আপনি বুঝবেন আপনার বাচ্চার দাঁত উঠবে। শিশুদের সাধারণত ছয় মাসের পর থেকে নয় মাসের মধ্যে দাঁত উঠতে শুরু করে। কিন্তু শিশুর এই দাঁত ওঠার আগে কিছু লক্ষণ দেখা দিবে। যে লক্ষণগুলো থেকে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার বাচ্চার দাঁত উঠতে পারে। এমন কিছু কয়েকটি লক্ষণ আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। লক্ষণগুলো নিচে উল্লেখ করে দেয়া হলো।
  • ঘুমের অভাব দেখা দেয় 
  • দাঁত ওঠার কারণে জ্বর হয় 
  • মুখ থেকে লালা পড়তে শুরু করে 
  • খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায় 
  • কামড়ানোর স্বভাব বৃদ্ধি পায়
  • মুখের রস বা ফুসকুড়িকে বাইর হতে পারে
  • চোষন প্রবণতা বৃদ্ধি
  • মাড়িতে ব্যথা হয়

বাচ্চাদের মাড়ির দাঁত ওঠার বয়স

তাদের মায়ের দাঁত উঠার বয়স কত এই বিষয়টি অনেক মা বাবারই অজানা। বাচ্চাদের সাধারণত ৬ মাস বা ৭ মাসের পর থেকে দাঁত ওঠা শুরু করে। আবার কারো কারো আরো পরেও হতে পারে। ছয় মাস থেকে শুরু করে দুই বছরের মধ্যে বাচ্চাদের  দাঁত উঠে ২০ টি। বাচ্চাদের সাধারণত ২০ টি দাঁত দুই বছরের মধ্যে উঠে যায়। আবার কারো কারো দুই এক মাস এদিক বা ওদিক হতেও পারে। কিন্তু নরমাল ভাবেই দুই বছরের মধ্যেই ২০টি দাঁত উঠে যায়।
গুরুত্বপূর্ণ পোষ্টঃ দাঁতের রুট ক্যানেল খরচ কত টাকা হয়

এছাড়াও কোন কোন বাচ্চার গ্রোতের কারণে সাত মাস আট মাস থেকেও শুরু হতে পারে। এবং দুই বছরের মধ্যে তার ২০ টি দাঁত না ওঠে আরো দুই মাস সময় লাগতে পারে। এই সময়টাই সাধারণত বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময়। প্রায় সকল বাচ্চার এই দুই বছরের মধ্যেই পুরোপুরি দাঁত উঠে যায়। কারো কারো দুই এক মাস অধিক হতে পারে, এ নিয়ে টেনশনের কোন কারণ নেই।

শিশুর দাঁত ওঠার সময় যা যা সমস্যা হয়

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কি তা জানার জন্য আপনাকে অবশ্যই দাঁত ওঠার সময় কি কি সমস্যা হতে পারে বাচ্চার সেটি জেনে নেওয়া উচিত। আপনার বাচ্চার যখন অতিরিক্ত রাগ হয়, খেতে চায়না, কান্না করে তখন বুঝে নিবেন আপনার বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় হয়েছে। আর এই সময় আপনার বাচ্চাকে সব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জিনিস দিবেন। কারণ এই সময় দাঁতের মাড়ি শিরশিরানি করে। আর তাই বাচ্চা যেটা পায় সেটাই মুখে দেয়।
বাচ্চাদের-দাঁত-ওঠার-সময়-কি-কি-সমস্যা-হতে-পারে
আর এইসব মুখে দেওয়ার ফলে বাচ্চার পাতলা পায়খানা, জ্বর, বমি হতে পারে। এজন্য বাচ্চার হাত দুটোও বারবার পরিষ্কার করে দিবেন। এই সময় বাচ্চাদের মায়ের দুধ এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার বেশি খাওয়াতে হবে। আর বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় সময় ভিটামিন ডি ড্রপস অবশ্যই দিবেন। কারো কারো দাঁত বেরোনোর সময় শরীরে ফোটা ফোটা ফুসকুড়ি বাহির হতে পারে। তবে দাঁত বাইর হয়ে যাওয়ার পর এই সমস্যাগুলো ঠিক হয়ে যাবে।

বাচ্চাদের দাঁত উঠার সময় কি খাওয়ানো যাবে

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কি এবং এই সময় কি খাবার দেওয়া উচিত সেটি অনেকেরই প্রশ্ন করে থাকে। এই সময় শিশুরা প্রতিদিন এক এক রকম জিনিস শিখে থাকে। এবং তাদের একেক দিন একেক রকম হয়ে থাকে। সাধারণত বাচ্চাদের ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে দাঁত ওঠা শুরু হয়ে যায়। এই সময় বাচ্চারা তেমন কিছু খেতে চায় না। এই সময় অর্ধেক খাবার তার মায়ের থেকে পাচ্ছে এবং বাকি অর্ধেকটা তাকে সলিট খাবার দেওয়া হয়ে থাকে। 

এই সময় যদি শিশুর অন্য কোন খাবার ভালো লেগে থাকে তাহলে সেই খাবারটি তাকে দিন। আর এমন খাবারগুলো দিতে হবে যে খাবার সে দাঁতে কামড়াতে পারবে। এতে করে বাচ্চার ভালোলাগা কাজ করে। তাই এই সময় বাচ্চাকে পাকা কলা খাওয়াতে পারেন। আবার সিদ্ধ ডিম খাওয়াতে পারেন। এগুলো সে চিবিয়ে  খেতে পারবে। এবং খাবারের পুষ্টিও পাবে। আবার বাচ্চার হাতে ধরিয়ে খাবার জন্য তাকে নরম গাজর বা শসা দিতে পারেন।

শিশুর দাঁত উঠতে দেরি হয় কেন

শিশুর দাঁত উঠতে দেরি হয় কেন আপনি কি তা জানেন। এই সকল বিষয়ে অনেকেই না জেনে অযথাই চিন্তা করেন। শিশুর দাঁতটাকে অনেকেই মনে করে তার বুদ্ধি বিকাশ এগিয়ে গেল। আর এজন্য শিশুর দাঁত দেরিতে উঠলে অনেক মা-বাবায় চিন্তায় পড়ে যায়। জন্মের পর একটি শিশু সাধারণত ছয় মাস পর থেকেই দাঁত ওঠা শুরু হয়। কিন্তু প্রতিটি শিশুর বিকাশ একরকম নাও হতে পারে। আর তাই অনেকের ছয় মাসের না উঠে দুই মাস পরেও উঠতে পারে।

দেরিতে ওঠার কিছু কারণ রয়েছে। যেমন তার পরিবারের বা বাবা-মায়ের দেরিতে দাঁত ওটা ইতিহাস আছে কিনা। এটা বংশাক্রম এর জন্যও হতে পারে তাই চিন্তার কোন কারণ নেই। এছাড়াও যেসব শিশু পূর্ণ বয়স না হওয়ার আগে জন্মায় এবং ওজন কম হয় তাদেরও দেরিতে দাঁত উঠতে পারে।বিভিন্ন ভিটামিন যেমন ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি এ সকল পুষ্টির অভাবে শিশুর দাঁত দেরিতে উঠতে পারে। আর পুষ্টির কারণে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। আর এ সকল কারণেই শিশুর দাঁত উঠতে সাধারণত দেরি হয়।

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় জ্বর হলে করনীয়

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কি তা অবশ্যই জানতে হবে। কারণ এই দাঁত ওঠার সময় অনেক শিশুদেরই বিশেষ করে জ্বর হয়ে থাকে। আসলে দাঁত ওঠার জন্য শিশুদের জ্বর আসে না। আসলেও খুব কম বাচ্চাদের দাঁত উঠার সময় আসতে পারে। আর সেজন্য যদি দাঁত ওঠার সময় আপনার বাচ্চার জ্বর এসে থাকে তাহলে তার কারণটা খুঁজে বের করা উচিত। দাঁত উঠার সময় অনেক শিশুরই মায়ের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শিশুর কমে যায়।
বাচ্চাদের-দাঁত-ওঠার-সময়-জ্বর-হলে-করনীয়
আর এই কারণে একটি শিশুর সাধারণত দাঁত ওঠার সময় জ্বর বা পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। সেই সময় দাঁত ওঠার কারণে আমরা মনে করে থাকি যে দাঁত ওঠার জন্য শিশুর এসব সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আসলে ব্যাপারটা একদমই তা নয়। আর তাই এই সময় বাচ্চাদের মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো উচিত। এবং তার অনেক যত্ন নেওয়া প্রয়োজন যাতে করে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় শিশুর।

শেষকথা

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কি তা এখন নিশ্চয়ই আপনি পুরোপুরি বুঝতে পেরেছেন। বাচ্চাদের এতটা সময় তার মা-বাবার বেশ কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে যেগুলো এতক্ষণে আপনি জেনেছেন। এই সকল করণীয়গুলো যদি আপনার বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় করেন, তাহলে আপনার বাচ্চা অসুস্থ হবে না বলে আশা করা যায়। এ ধরনের আরও সকল তথ্য পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটে ফলো দিয়ে রাখতে পারেন। আমরা প্রতিনিয়তায় এ সকল তথ্য আপডেট দিয়ে থাকি। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url