হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয় কি তার ১০ টি ট্রিপস

হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয় কি তা জানতে আজকে আপনি সঠিক আর্টিকেলে প্রবেশ করেছেন। হঠাৎ করে হাই প্রেসার হয়ে গেলে নানান ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। আর তাই এই সমস্যা কি আমরা কিভাবে দূর করতে পারি এই আর্টিকেল আলোচনা করেছি।
হঠাৎ-হাই-প্রেসার-হলে-করণীয়
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে হাই প্রেসার কমানো সম্ভব তার ১০ টি ট্রিপস আপনাদের সামনে এই আর্টিকেলে তুলে ধরেছি। আপনি যদি একজন হাই প্রেসার রোগী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য এই আর্টিকেলটি মূল্যবান। তাই চলুন সেই ১০ টি ট্রিপস সম্পর্কে জেনে আসি।

পেজ সূচিপত্রঃ হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয়

হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয়

হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয় কি তা জানা আমাদের সকলেরই প্রয়োজন। সবারই স্বাভাবিক একটি রক্তচাপ থাকে। তবে যারা সাধারণত রক্তচাপের রোগী, তাদের হঠাৎ করে হাই প্রেসার হওয়ার ভয় থাকে। অনেকেই চিন্তা করে সে এ অবস্থায় কি করবে। প্রথমত হাই প্রেসার রোগীকে চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে। কোন প্রকার টেনশন করা যাবেনা। আরে দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য আপনি বসে থাকুন বা বিশ্রাম নিবেন।

একজন হাই প্রেসারের রোগীর ১০ পর্যন্ত পেশার বেড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। তবে দশের বেশি যদি বেড়ে যায় তবে প্রেসারের যেই ওষুধটি আপনি খান সেই ওষুধটি আপনি সাথে সাথে খেয়ে নিবেন। তারপর এক ঘন্টা পর মেপে দেখবেন সেই প্রেসারের মাত্রা কমে যাবে। এরপরেও যদি আপনার প্রেশার না কমে, তখন আপনি যেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছিলেন সেখানে গিয়ে আবারো পরামর্শ নিতে পারেন।
প্রয়োজনীয় পোষ্টঃ হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার

আবার পরপর তিনদিন যদি তিনটি ঘুমের ওষুধ খান তাহলে প্রেশার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এক্ষেত্রে যাদের ঘন ঘন এরকম অবস্থা দেখা যায় তাহলে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে চিকিৎসার পরামর্শ নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। এবং পেশার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনার খাবারের তালিকা গুলো মেন্টেন করে চলতে পারেন। তাহলে আশা করা যায় হাই প্রেসার অনেকটা নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে।

হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় কি

হাই প্রেসার কমার ঘরোয়া উপায় কি এটা অনেকেরই অজানা। তাই হুটহাট করেই কারো কারো প্রেসার বেড়ে যায়। আপনি চাইলে এই হাই প্রেসার ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া উপায়েও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। ঘরে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করার উপায় রয়েছে। কিন্তু যাদের অতিরিক্ত হাই প্রেসার তাদের ঘরোয়া উপায়ের চাইতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ যে কোন সময় হাই প্রেসারে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে দিতে পারে।

১২০/৮০ প্রেসারের এই মাত্রাটিকে আমরা সাধারণত স্বাভাবিক ভাবে ধরি। এর ওপরে যদি চলে যায় তাহলে তখন আমরা হাই প্রেসার বলে থাকি। ঘরোয়া উপায়ে হাই প্রেসার কন্ট্রোল করার জন্য বেশ কিছু মাধ্যম রয়েছে। যেমন ডায়েট করা, ব্যায়াম করা, ওজন নিয়ন্ত্রণ এ সকল নিয়মগুলো পালন করলে আপনার হাই প্রেসার অনেকটাই ঘরোয়া উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আপনার যদি হাই প্রেসার থাকে এ সকল বিষয়গুলো বিবেচনা করা চলতে হবে।

হঠাৎ প্রেসার বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ

হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয় কি তা জানার জন্য অবশ্যই আমাদের জানতে হবে হঠাৎ প্রেসার বেড়ে যাওয়ার লক্ষণগুলো কি কি। হঠাৎ প্রেসার বেড়ে যাওয়ার বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। সেগুলো যদি আপনার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে তাহলে বুঝে নিবেন আপনার হাই প্রেসার হয়ে গেছে বা প্রেসার বেড়ে গেছে। আর তখনই আপনি সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। অথবা ঘরোয়া উপায়ে আপনার প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে পারবেন।

হঠাৎ প্রেসার বেড়ে যাওয়ার লক্ষণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • মাঝে মাঝে মাথা ঘুরে উঠবে
  • মাথা ব্যথা হওয়া
  • বমি হওয়া
  • ঘাড়ে ব্যথা
  • ঘুম কম হওয়া
  • শ্বাসকষ্ট হওয়া
  • শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া
  • চোখে আবঝাপ দেখা
সাধারণত এ সকল লক্ষণগুলো দেখা দিলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার হাই প্রেসার হতে পারে। এগুলো লক্ষণ দেখা দিলে আপনি সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায়

হাই প্রেসার কমানোর উপায় গুলো জানলে আপনি নিজেই অনেকটাই আপনার হাই প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারেন। কিন্তু অনেকের এই বিষয়টি অজানা বা জেনেও অনেকেই গুরুত্ব দেয় না। হাই প্রেসার কমানোর প্রথম কাজটি হল আপনি কখনোই কাঁচা লবণ খাবেন না। আপনি হয়তো ভাববেন কাঁচা লবণ না খেয়ে লবণ ভেজে খাবেন। এটাও একদমই খাওয়া যাবে না। কারণ কাঁচা লবণ অথবা ভাজা লবণ দুটোতেই সোডিয়াম রয়েছে। আর এই সোডিয়াম উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।
দ্রুত-হাই-প্রেসার-কমানোর-উপায়
এছাড়াও লবণ জাতীয় খাবার গুলোকে এড়িয়ে চলতে পারেন। পোলাও ভাত না খেয়ে সাদা ভাত খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তেল বা চর্বি জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। দিনে দুই থেকে তিন চামচের বেশি তেল একদমই খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। এবং যেগুলো খেলে রক্তচাপ কমায় যেমন পটাশিয়াম উপাদান যুক্ত খাবার খেতে হবে। এর জন্য প্রতিদিন ৩-৪টা ফল খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এবং বেশি বেশি শাকসবজি খাবেন। তাহলে আপনার হাই প্রেসার কমানো সম্ভব।

হাই প্রেসার হলে কি খাওয়া উচিত না

হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয় কি এবং কি কি খাওয়া যাবেনা এই বিষয়ে আপনি যদি একজন হাই প্রেসার রোগী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই জানতে হবে। হাই প্রেসার হলে অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। হাই প্রেসার হলে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা প্রয়োজন যেগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। হাই প্রেসার হলে কিছু খাবার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত তার কারণ হাই প্রেসার এর ফলে ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ এবং হৃদরোগের মতো সমস্যা দেখা দেয়।

কারো হাই প্রেসার হলে প্রথমেই তাকে লবণ থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ লবণে অতিরিক্ত সোডিয়াম থাকে, আর এই সোডিয়াম উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও চাঁদের হাই প্রেসার আছে তারা কফি খাবেন না। কারণ কফিতে ক্যাফেইন থাকে যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। কফি খেলে হঠাৎ করেই উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায়, যার ফলে স্ট্রোক হতে পারে। এছাড়াও যাদের হাই প্রেসার রয়েছে তাদের রেড মিট খাওয়া যাবেনা।

রেড মিট অর্থাৎ গরুর মাংস, খাসির মাংস, মহিষের মাংস এই ধরনের মাংস খাওয়া যাবে না। এছাড়াও মুরগির চামড়া সহ মুরগির ডিমের কুসুম খাওয়া যাবেনা। কারণ এগুলো খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও আরো কিছু খাবার রয়েছে যেমন চিনে যুক্ত খাবার গুলো খাওয়া যাবে না। এর ফলে শরীরের ওজন বেড়ে যায় এবং মোটা হয়ে যায়, ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। এ সকল খাবারগুলো মেনটন করে চললে হাই প্রেসার অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

হাই প্রেসার কমানোর ঔষধের নাম

হাই প্রেসার কমানোর ঔষধের নাম হয়তো আপনি জানেন না। হাই প্রেসার দেখা দিলেই ডাক্তারের কাছে চলে যান ওষুধের নাম জিজ্ঞেস করতে। কিন্তু আমরা যদি নিজেই ওষুধের নাম জেনে থাকি তাহলে খুব দ্রুত তা খেতে পারব। তবে নিজে নিজে ওষুধ কিনে খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তার থেকে প্রেসার মেপে দেখা প্রয়োজন। কারণ একেক ধরনের প্রেসার এর জন্য ভিন্ন ভিন্ন ঔষধ সেবন করা হয়ে থাকে। নিচে কিছু হাই-প্রেশার রোগীর ঔষধের নাম উল্লেখ করা হলো।
  • Valsartan
  • Lisinopril
  • Ramipril
  • Enalapril
  • Losartan
  • Olmesartan
এই সকল ঔষধ গুলো খেলে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

হাই প্রেসার কমানোর যোগ্য ব্যায়াম

হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয়র জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম রয়েছে। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে স্বাস্থ্য উপকারের পাশাপাশি হাই প্রেশারও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এ সকল ব্যাংকগুলোর মধ্যে আপনি প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে হাঁটতে পারেন। এটি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া আপনি যদি শারীরিকভাবে সক্ষম হন তবে আপনি হাঁটার পরিবর্তে দৌড়াতেও পারেন। এছাড়াও আপনি হালকা ওজন তোলে ব্যায়াম করতে পারেন।

এছাড়াও শরীরের ওজন কমানোর জন্য আরও অনেক ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন। ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ব্যাঙের পাশাপাশি ধ্যান ধারণা করলে চিন্তামুক্ত হয় এবং পাশাপাশি রক্তচাপ কমে যায়। এছাড়াও খেলাধুলা করলেও শরীরের ব্যায়াম হয়ে যায়। তাই আপনি চাইলে প্রেম করার জন্য খেলাধুলাও করতে পারেন। এরপরেও আপনার কোন সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

হাই প্রেসার হলে কি খাওয়া উচিত

হাই প্রেসার কে বলা হয় নীরব ঘাতক। কারণ অনেকের ক্ষেত্রেই এই রোগ সহজে ধরা পড়ে না। আর ধরা পড়লেও তার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অনেক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর যে কোন বয়সের মানুষের মধ্যে হাই প্রেসার দেখা যায়। সাধারণত অতিরিক্ত ওজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস ঠিক না থাকার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। আর তাই তাদের জন্য অবশ্যই খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনা খুবই প্রয়োজন বলে মনে করেন সকল বিশেষজ্ঞরা।

তাহলে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এমন কিছু খাবার আছে যা আপনার হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। এর জন্য প্রতিদিন আপনি তাজা ফল খেতে পারেন। যেমন পেয়ারা, আপেল, আমলকি, কমলা, বেঁদেনা, কলা ইত্যাদি। এছাড়াও প্রতিদিন নিয়মিত প্রচুর সবুজ শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। পালং শাক, কলমি শাক, শসা, লাউ, ঢেঁড়স ইত্যাদি। এবং যেসব খাবারে পটাশিয়াম রয়েছে সেগুলো খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে যাবে।
হাই-প্রেসার-হলে-কি-খাওয়া-উচিত
যেমন কলা, ডাবের পানি, টমেটো ইত্যাদি। এগুলোতে প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও সকালে খালি পেটে ভেজানো বাদাম খেতে পারেন। চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম ইত্যাদি। এবং বেশি বেশি করে মাছ খাবেন। মাছের উপকারিতা অনেক বেশি। তবে যেসব মাছে অতিরিক্ত তেল থাকে সেগুলো খাওয়া যাবে না। এ সকল খাবারগুলো খেলেই আপনার হাইপ্রেশার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে।

শেষকথা

হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয় তা নিশ্চয় আপনি এতক্ষনে বুঝতে পেরেছেন। এবং এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি হাই প্রেসার বিষয়ে সকল তথ্য জানতে পেরেছেন আশা করি। হাই প্রেসার রোগী যেকোনো সময় বিপদে পড়তে পারে, তাই আমাদের সবসময় হাই প্রেসার কট্রোলে রাখা প্রয়োজন। আর তাই এই সকল বিষয় মানিয়ে চলা প্রয়োজন। তাহলে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে।

আপনার যদি আরো কোনো তথ্য অজানা থাকে তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইটে ফলো দিয়ে রাখতে পারেন। আমরা প্রতিনিয়তই অজানা তথ্য গুলো আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করি। তাই আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url