শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে ১০টি সেরা টিপস

শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার জানতে আজকে আপনি সঠিক আর্টিকেলে প্রবেশ করেছেন। বর্তমানে অনেক শিশুই এখন ডেঙ্গু রোগে বেশি ভুগছে। কিন্তু এই ডেঙ্গু রোগ কেন হচ্ছে বা এর থেকে বাঁচার উপায় কি এটা আমরা অনেকেই জানিনা।
শিশুর-ডেঙ্গু-রোগের-লক্ষণ-ও-প্রতিকার
তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার কিভাবে করতে হয় এবং এর লক্ষণ গুলো কি কি তার ১০ টি টিপস আজকের এই আর্টিকেলে তুলে ধরেছি। তাই এই বিষয় সম্পর্কে জানতে আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পুর্ন আপনার জন্য।

পেজ সূচিপত্রঃ শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার গুলো কি কি তা আমরা অনেকেই জানিনা। আর বর্তমানে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়তেই আছে। তাই এই বিষয় সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা উচিত। আর বর্তমানে শিশুরাই ডেঙ্গু রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুদের ডেঙ্গু রোগ হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। সেগুলো হল, শিশুটি খাওয়া-দাওয়া কমে যাবে, দৌড় ঝাপ খেলাধুলা এগুলো কমে যাবে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডেঙ্গু রোগের জন্য।

আবার শিশুরা আনমনা হয়ে থাকে। শিশুর লিভার এনজাইম বেড়ে যেতে পারে, পেটে পানি আসতে পারে, শ্বাসকষ্ট হতে পারে, জ্বর আসতে পারে এ সকল লক্ষণগুলি ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ। আর এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলে এর সাথে সাথে প্রতিকার করা প্রয়োজন। এর জন্য আমাদের জ্বর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। আর রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। এবং শিশুকে বেশি বেশি পানীয় খাদ্য খাওয়াতে হবে। মশার উপদ্রব কমাতে মশারি ব্যবহার করতে হবে। এবং শিশুর যত্ন নিতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বরের ৭টি সতর্কীকরণ লক্ষণ

ডেঙ্গু জ্বরের ৭টি সতর্কীকরণ লক্ষণ গুলো দেখা দিলে অতি তাড়াতাড়ি ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। আর এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়ার পরেও যদি অবহেলা করা হয় তাহলে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। অনেকের ডেঙ্গু রোগের ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই বিষয়টি অবহেলা না করে আমাদের এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে অতি তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। ৭টি সতর্কীকরণ লক্ষণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
  1. অত্যাধিক বা খুব বেশি পরিমাণে তৃষ্ণা লাগা
  2. অতিরিক্ত পেট ব্যাথা হওয়া
  3. রক্তপাত হওয়া
  4. চোখের মধ্যে ব্যথা হওয়া
  5. শ্বাসকষ্ট হওয়া
  6. রক্তের পালস কমে যাওয়া
  7. এবং অতিরিক্ত জ্বর হওয়া
এ সকল সমস্যাগুলো দেখা দিলে আমাদের অতি তাড়াতাড়ি, ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাচার উপায়

শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচার উপায় গুলো কি কি আপনি যদি না জেনে থাকেন, তাহলে জানা খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে শিশুদের জন্য ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচতে হলে এবং দূরে রাখতে হলে শিশুকে সবসময় ফুল প্যান্ট বা ফুল জামা পরিধান করাতে হবে। এবং শিশুরা যেখানে খেলাধুলা করবে সেই জায়গাতে যেন অতিরিক্ত ময়লা পানি জমে না থাকে, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

পাশাপাশি বাড়ির আনাচে কানাচে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এছাড়াও রাতে বা যেকোনো সময় ঘুমানোর জন্য শিশুকে মশারির মধ্যে রাখা প্রয়োজন। যাতে ডেঙ্গু মশা শিশুকে কামড়াতে না পারে। এবং সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা সহজ সর্তকতা থাকা জরুরি। এবং শিশুদের ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়ানো উচিত, এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। উক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য করে চললেই ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচাও সম্ভব

ডেঙ্গু জ্বরের কারণে কোনটি হয়

ডেঙ্গু জ্বরের কারণে কোনটি হয় তাহলে তো এতক্ষণে কিছুটা আপনি আন্দাজ করতে পারছেন। ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার কারণে বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এই ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত ডেঙ্গু মশার কামড়ের ফলে হয়ে থাকে। ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরের উপর বেশ কিছু প্রভাব পড়তে পারে যেমন, অতিরিক্ত মাথা যন্ত্রণা করা, এবং অতিরিক্ত মাত্রায় জ্বর আসতে পারে। এছাড়াও পুরো শরীরে ব্যথা অনুভূত হয়।

শিশুদের ক্ষেত্রে এটি আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। এছাড়াও পেটের ব্যাথা হতে, পারে রক্তের চাপ কমে যেতে পারে, এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে তৃষ্ণা লাগতে পারে। এই সকল বিষয়গুলো অবহেলা করে চললে ডেঙ্গু জ্বর থেকে আপনার মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই ডেঙ্গু জ্বর হলে খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।

ডেঙ্গু রোগের বাহক কোন মশা

শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানার পরে আপনাকে জানতে হবে ডেঙ্গুর রোগ হয় কোন মশার জন্য। ডেঙ্গু রোগের জীবাণু বাহী মশাটি হল এডিস মশা। এই মশার নাম লেডিস মশা হলেও অনেকের কাছে এটি ডেঙ্গু মশা নামে পরিচিত। আর এই ডেঙ্গু মশা কামড়ালে ও স্থান ফুলে যায় এবং চুলকায়। আর এই জীবাণু বাহি এডিস মশা কামড়ানোর ফলে ডেঙ্গু রোগ হয়ে যায়। এডিস মশার গায়ে সাদা সাদা দাগ থাকে সেজন্য এটি সহজেই চেনা যায়।
ডেঙ্গু-রোগের-বাহক-কোন-মশা
তবে এডিস মশা কামড়ালে শুধু ডেঙ্গু রোগ হয় না। ডেঙ্গু রোগ বাহির যে কোন মশা কামড়ালেই ডেঙ্গু রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার যে কোন মশা যদি একজন ডেঙ্গু রোগীকে কামার দেয়, এবং সেই মশা যদি একজন সুস্থ মানুষকে কামড়ায় তাহলে সেই সুস্থ ব্যক্তিও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই আমাদের যে কোন মশা থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন। তাই বলা যায় যে কোন মশাই ডেঙ্গু রোগের বাহক হতে পারে।

শিশুর ডেঙ্গু হলে কি কি খাওয়া যাবে না

শিশুর ডেঙ্গু হলে কি কি খাওয়া যাবে না তার কিছু উদাহরণস্বরূপ আপনাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। একটি শিশুর ডেঙ্গু রোগ হলে তাকে কিছু খাবার নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত এবং কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। সেই খাবারগুলো হল চর্বি জাতীয় কোন খাবার যেমন চিকেন, বার্গার, পেয়াজু, এছাড়াও চর্বি জাতীয় মাংস এরিয়া চালা উচিত। এছাড়াও মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন, কেক চকলেট, জুস ইত্যাদি।

এছাড়াও চা কফি সহ বিভিন্ন রকম অ্যালকোহল যুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এবং যেসব খাবারে অতিরিক্ত মসলা ব্যবহার করা হয়, ডেঙ্গু রোগ হলে সেগুলো খাওয়াও ঠিক নয়। তাই কারো যদি ডেঙ্গু হয় এ সকল খাবারগুলো এড়িয়ে চলা ভালো।

ডেঙ্গু জ্বর হলে সুস্থ হতে কত ‍দিন লাগে

শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং এর থেকে সুস্থ হতে কত দিন সময় লাগে তা অনেকেরই প্রশ্ন থাকে। ডেঙ্গু রোগ সাধারণত বিভিন্ন রকম আকার ধারণ করতে পারে। কারো কারো অল্পতেই সেরে যায় আবার কারো এই অসুখটি মারাত্মক হয়ে যেতে পারে। তাই এই ডেঙ্গু রোগ থেকে আমাদের সতর্কতা থাকতে হবে। সাধারণত ডেঙ্গু রোগ হলে এর থেকে সুস্থ হতে সময় লাগতে পারে ১০ থেকে ১৫ দিনের মতো।

তবে এর জন্য সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে এটি আরো মারাত্মক রোগ ধারণ করতে পারে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই আমাদের ডেঙ্গু রোগ হলে খুব দ্রুত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়া প্রয়োজন।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে তা হয়তো আমরা বুঝতে পারছি। ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে যেতে পারে, আর তাই এই সময় বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। ডেঙ্গু জ্বর হলে অত্যন্ত তৃষ্ণা পায়, সে কারণে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া প্রয়োজন। এবং খুব তাড়াতাড়ি হজম হবে এমন খাবার খাওয়া উচিত যাতে কোনরকম সমস্যার সৃষ্টি না হয়। এছাড়াও প্রচুর ফল খাওয়া উচিত যেমন কলা, পেঁপে, আমলকি, কমলা, আঙ্গুর, আপেল ইত্যাদি।
ডেঙ্গু-জ্বর-হলে-কি-খেতে-হবে
এবং আপনি চাইলে দুধ ও ডিমও খেতে পারেন। এতে শরীর দুর্বল হলে তা কাটিয়া তুলতে সাহায্য করে। এবং যেসব সবজিতে অনেক পুষ্টি রয়েছে সেগুলো সবজি ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে। যাতে আপনার শরীরের দুর্বলতা কে কাটিয়ে দিয়ে সুস্থ সবল জীবন দিতে সাহায্য করে। এভাবে খাবারগুলো মেন্টন করে খেলে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে।

শেষকথা

শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আশা করি আপনি পুরোপুরি ধারণা পেয়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। ডেঙ্গু রোগের জন্য অনেক রোগীর বর্তমানে মারাও যাচ্ছে। তাই এই বিষয়ে আমাদের সব সময় সতর্ক থাকা খুবই প্রয়োজন। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। এবং এর থেকে আপনি কিছুটা হলেও নিজেকে সতর্ক রাখতে পারবেন আশা করছি। এরকম আরো প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url