হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় ও করনীয় কি তার বিস্তারিত

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় পেতে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য সাজানো হয়েছে। বর্তমান সময়ে হাটুর ব্যথা একটি পরিচিত সমস্যা। বর্তমান সময়ে এই সমস্যায় ভুগছেন অনেক বয়স্ক নারী ও পুরুষ। আপনারা নিশ্চয়ই এর সমাধান খুজতেছেন।
হাঁটুর-ব্যাথা-সারানোর-ঘরোয়া-উপায়
তাই ঘরোয়া উপায়ে হাঁটুর ব্যথা সারানোর জন্য এই আর্টিকেলে আমরা তুলে ধরেছি দশটি উপায়। আপনি যদি হাটু সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য। তাই চলুন জেনে আসি দশটি উপায়গুলো কি কি।

পেজ সূচিপত্রঃ হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় বেশ রয়েছে তা আমাদের অনেকেরই অজানা। হাঁটু ব্যথা কে দুই ভাগে ভাগ করা যায় যেমন তীব্র ব্যথা আরেকটি হচ্ছে মৃদু ব্যথা। অনেকদিন ধরে যেই ব্যথা স্থায়ী হয়ে থেকে যায় সেটা হচ্ছে মৃদু ব্যথা। আর তীব্র ব্যথা হচ্ছে হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া যে ব্যথা হয় সেটাই তীব্র ব্যথা। ঘরোয়া উপায়ে হাঁটু ব্যথা সারানোর জন্য সর্বপ্রথম মাধ্যম হচ্ছে বিশ্রাম। এছাড়াও ঘরোয়া উপায়ে অনেক রকম ব্যায়াম করে হাঁটুর ব্যাথা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

তীব্র ব্যথা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই প্রায় অর্ধ মাস খানেক আমাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। প্রায় ১৫ দিন যাবত হাঁটু ভাঁজ করা যাবে না। এবং অযথা হাটাহাটি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এত বেশি হাটাহাটি করলে শরীরের সমস্ত ভরা হাঁটুতে এগিয়ে পড়ি তখন হাঁটুর ব্যাথা আরও বৃদ্ধি পায়। এবার ব্যথা কৃত জায়গায় মালিশ করা যাবে না। এরপরে যেটি করবেন সেটি হচ্ছে বরফ ব্যবহার। ব্যথা কৃত স্থানে যদি বরফের শেখ দেওয়া হয় তাহলে অনেকটাই আরাম পাওয়া যাবে। 

এছাড়াও ব্যথা হওয়া অবস্থায় পা উপরে করে রাখা উচিত। বিশ্রাম মানে একদম পুরোপুরি শুয়ে থাকতে হবে। এবং পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে উপরে করে রাখা ভালো। এসব ঘরোয়া উপায় এর নিয়ম গুলো মেনে ১৫ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত বিশ্রাম নিলে হাঁটুর ব্যথা অনেকটাই সেরে যায়।সারা ঘরোয়া উপায় অনেক আয়ুর্বেদিক ওষুধ খেয়েও হাঁটুর ব্যাথা নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব। ঘরোয়া উপায় অনেক আয়ুর্বেদিক ওষুধ খেয়েও হাঁটুর ব্যাথা নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব।

হাটুর ব্যাথা হওয়ার কারন কি

এখন প্রায় বেশিরভাগ মানুষই হাঁটুর ব্যথাতে ভুগছেন। তাই হাঁটুর ব্যথা সারানোর ঘরোয়া উপায় জানতে চাই অনেকে। কিন্তু হাঁটুর ব্যথা হওয়ার কারণটা কি এটা কেউ আমরা খেয়াল করি না বা জানিনা। বাসার সাথে সাথেই হাঁটুর ব্যথা একটি খুব কমন একটি উপসর্গ। যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের চলাফেরা করার ক্ষেত্রে অনেকটাই প্রভাব ফেলে। মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে হাটু। যাদের বয়স 

৪০ বছর ছাড়িয়ে গিয়েছে তাদের হাঁটু ব্যথার প্রধান কারণ হলো, হাটুর ক্ষয়জনিত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। আবার যাদের বয়স ১৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছে তাদের হাঁটু ব্যাথার কারণ হচ্ছে, প্যাটেলো ফিমোরা সিড্রম। মানুষের হাটুর সামনে যে অস্থি রয়েছে যাকে বলা হয় প্যাটেলো বা নিক্যাপ। আর সেখানে সমস্যা হওয়ার কারণে হাঁটু ব্যথা সমস্যা হয়ে থাকে। এছাড়াও হাঁটু ব্যথার কিছু কারণ রয়েছে যেমন ইনজুরি। 

হাঁটুর চারপাশে যে স্ট্রাকচার গুলো রয়েছে যেমন, লিগামেন্ট, টেন্ডন বার্সা ইত্যাদি এসব জায়গায় ইনজুরি বা প্রদাহ হলে হাঁটু ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বয়স হওয়ার সাথে সাথে এই হাঁটু ব্যথা বৃদ্ধি পায়। ফলে অনেকের জীবনী ঝুঁকের মুখে পড়ে যায়। এর জন্য আমাদের সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক চিকিৎসা অবলম্বন করতে হবে। তাহলে আপনার হাঁটু ব্যাথা অনেকটাই দূর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কোন প্রকার সমস্যা দেখা দিলে আপনি নিজেই ঘরোয়া উপায় চিকিৎসা নিতে পারেন।

হাটুর ব্যাথা সারানোর খাবার গুলো জেনে নি

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় এর জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু খাবার বেশি বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন। এই সেকশনে আমরা জানবো হাঁটু ব্যাথা হলে কোন খাবারগুলো আমাদের বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। হাটু ব্যথা বর্তমানে অনেকেরই কমন একটি সমস্যা। আর এই হাটু ব্যাথা সারানোর জন্য বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা কিছু পুষ্টিকর খাবারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেগুলো খেলে হাটু ব্যথা অনেকটাই কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে হাঁটু ব্যথা হলে এমন কিছু খাবার রয়েছে যা খেলে হাঁটু ব্যথা খাবারের মধ্যে চিকিৎসা হয়ে যাবে। যেমন, বেদেনা, অলিভ অয়েল, সবুজ শাকসবজি এগুলো আপনার হাঁটু ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়াও কার্টিনেজ রিজেনারেশন করার জন্য, ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন, কমলা লেবু, পেয়ারা, স্ট্রবেরি, আমলকি খেতে পারেন। এছাড়াও আরো কিছু খাবার রয়েছে যেমন রসুন, হলুদ, সবজি এবং প্রচুর পরিমাণে মাছ খাওয়া প্রয়োজন। 

এবং হাড় শক্ত করতে এবং হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন মাশরুম, পালং শাক, ডিমের সাদা অংশ থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এসব খাবার গুলো বেশি করে খাবেন। এবং প্রতিদিন সুষম খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করবেন। এতে করে আপনার হাঁটুর ব্যথা অনেক কমে যাবে। তাই আমাদের নিয়মিত পুষ্টিগুনে ভরপুর খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন।

হাটুর ব্যাথা সারানোর ব্যায়াম কি

হাঁটু ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়ে কিছু কার্যকরী ব্যায়াম রয়েছে। যেগুলো করলে আপনার হাঁটু ব্যথা অনেকটাই সেরে যেতে পারে।
  • স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ: একটি চেয়ারে বসে দুই পায়ের মধ্যে যেকোনো এক পা সামনের দিকে নিয়ে সোজা করতে হবে। এবং আরেক পা নিচে থাকবে। তারপর আস্তে আস্তে পা নড়াচাড়া কড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। এক পা হয়ে গেলে আবার পরবর্তী আরেক পা এইভাবেই সোজা করে নাড়াচাড়া করে ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে হাটু নড়াচড়া করতে সুবিধা হবে এবং হাটতে গিয়ে ব্যথা পাওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে।
  • কুইড্রিসেপস স্ট্রেচ: এই ব্যায়ামটিতে দাঁড়িয়ে থেকে এক পা পিছন দিকে নিয়ে উপরে উঠানোর চেষ্টা করতে হবে। এবং পিছন দিয়ে পায়ের গোড়ালি হাত দিয়ে ধরে নড়াচড়া করানোর চেষ্টা করতে হবে। এতে আপনার হাঁটুর পেশির স্ট্রেচ করতে সাহায্য করবে। আবার বিছানায় শুয়ে থেকে এক পা উপরে করে ভাঁজ করার চেষ্টা করুন। এবং শরীরকে ওঠানো নামানোর চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার মাজার ব্যাথা কমাতে সাহায্য করবে।
  • লেগ রাইস ব্যায়াম: এই ব্যায়ামে বিছানায় শুয়ে থেকে একটা পা সরাসরি উপরে তুলে কিছুক্ষণ রাখতে হবে। তারপর আবার ধীরে ধীরে নিচে নামিয়ে আনতে হবে। এক পা হয়ে গেলে পরবর্তী আবার আরেক পায়ে ঠিক এইভাবেই ব্যায়াম করতে হবে এতে হাঁটুর ব্যথা অনেকটাই কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়। এবং ব্যায়াম গুলো করে যদি আপনি আরাম না পান তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।

হাঁটুর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় ও কিছু চিকিৎসা রয়েছে। যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনার হাঁটু ব্যথা ঘরোয়া উপায়ে আপনি নিজেই সারিয়ে তুলতে পারেন। তার মধ্যে একটি হলো গরম পানির সেক ও বরফ দিয়ে সেক দেওয়া। বরফ দিয়ে সেক দেওয়ার ফলে ব্যথা অনেকটাই কম অনুভূত হয় এবং গরম পানি দিয়ে সেক দিলে ব্যথার স্থানে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। আর এতে করে আস্তে আস্তে ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও আদা দিয়ে চা খেতে পারেন।

ওজন নিয়ন্ত্রন করতে হবে, প্রয়োজনের চেয়ে ওজন বেশি হয়ে গেলে পুরো শরিরের ওজন হাঁটুতে গিয়ে পড়ে। এতে করে হাঁটুতে অনেক চাপ পড়ে এবং হাঁটু ব্যাথা হওয়ার কারন হয়ে যায়। তাই আমাদের সকলের প্রয়োজন পুষ্ঠিকর খাবার খেয়ে আমাদের ওজন ঠিক রাখা দরকার। আবার ঘরের মধ্যে অনেক ধরনের ছোট খাটো ব্যায়াম করা যেতে পারে যার কারনে হাঁটুর ব্যাথার জন্য আরাম দায়ক হয়ে থাকে। তাই আমাদের নিয়মিত ব্যায়ামও করা উচিত। 
আপনার প্রয়োজনীয় আরেকটি পোষ্টঃ সজনে পাতার উপকারিতা ও গুনাগুন

এছাড়াও ব্যাথার জায়গায় অলিভ ওয়েল বা নারিকেল দিয়ে মাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। আবার সরিষার তেল ও রসুন একসাথে গরম করে তা মাসাজ করলে ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। এবং ঘরোয়া চিকিৎসার সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম হচ্ছে বিশ্রাম। আপনি যত বিশ্রাম নিতে পারবেন আপনার হাঁটু ব্যাথা তত তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে। বিশ্রাম নিলে হাঁটুর ওপর অধিক চাপ পড়ে না, তাই তাড়াতাড়ি সারিয়ে যায় বিশ্রাম নিলে।

হাটু ভাজ না হওয়ার কারণ কি

হাঁটু ভাজ না হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে যার জন্য আমরা হাঁটু ভাজ করতে গেলে সমস্যা হয়। তাই আমাদের জানতে হবে কেন আমাদের হাটু ভাজ হয় না, বা ভাজ করতে গেলে ব্যথা লাগে কেন। সেই সাথে আমাদের এটাও জানতে হবে যে হাঁটু ভাজ না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার গুলো কি কি। হাটু ভাজ না হওয়ার একটি কারণ হচ্ছে লিগামেন্ট ইনজুরি। লিগামেন্ট এনজুরি হওয়ার ফলে অনেকেই হাঁটু ভাঁজ করতে পারে না আবার হাঁটুতে বর দিয়ে চলতেও পারে না। 

আবার হাঁটু ভাজ না হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে মাসেল প্লাজম। এর ফলে মাসেল গুলোর ফ্লেক্সিবল কমে আসে যার কারণে হাঁটু ভাঁজ করতে গেলে ব্যথা অনুভূত হয়। আবার নি জয়েন্ট ফ্লেকচার হওয়ার কারণে হাঁটু ভাঁজ করতে গেলে সমস্যা হয়। আপনার হাঁটু যদি কোনদিন সার্জারি বা অপারেশন করা হয়ে থাকে তাহলে দেখবেন আপনার হাঁটু ভাঁজ করতে সমস্যা হচ্ছে। অস্থিওরাইটিস হওয়ার ফলে ও হাঁটু ভাঁজ করা যায় না বা ভাঁজ করতে গেলে সমস্যা হয়। 

হাঁটুর জয়েন্টে যদি ইনফ্লামেশন হয় তখন হাঁটু ভাঁজ করতে সমস্যা হয়। এসব সমস্যাগুলো দেখা দিলে আপনারা বিভিন্ন রকমের ব্যায়াম করার ফলে এই সমস্যাগুলোকে দূর করতে পারেন।  ব্যায়াম করার মাধ্যমে এসব সমস্যা দূর করা যায় অনায়াসেই। ঘরোয়া উপায় আপনি যত ব্যায়াম করতে পারবেন আপনার হাঁটু ভাঁজ করতে আস্তে আস্তে কোন অসুবিধা হবে না।তাই হাঁটু ভাজ না হওয়ার সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আপনি ব্যায়াম করতে পারেন।

হাঁটু ব্যথার আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা

হাঁটুর ব্যথার জন্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বেশ  কার্যকরী হতে পারে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় দেহের বিভিন্ন জায়গার ব্যথা এবং বিভিন্ন সংক্রমণ শরীর থেকে দূর করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন রকমের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা রয়েছে হাঁটো ব্যথার জন্য। বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক তেল মাসাজ করে হাঁটুর ব্যথাকে সারিয়ে তোলা যায়। যেমন মেহেন্দি তেল,   বিশাগী তেল, নীরাচল তেল ইত্যাদি মাসাজ করার ফলে হাঁটুর ব্যথা কমে যেতে পারে। 
হাঁটু-ব্যথার-আয়ুর্বেদিক-চিকিৎসা
এসব তেল হালকা কুসুম কুসুম গরম করে ব্যাথা হওয়া স্থানে মাসাজ করলে ধীরে ধীরে ব্যথা সেরে যায়। আবার কাঁচা হলুদের পেস্ট তৈরি করে হাঁটুতে লাগালে হাঁটুর ব্যাথার ধীরে ধীরে কমতে সাহায্য করে। এছাড়াও হলুদের গুড়া এক গ্লাস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলেও হাঁটুর ব্যথা কমতে শুরু করে। ব্রাহ্মি ও আশ্বগন্ধা জাতীয় গাছে প্রচুর পরিমাণে আয়ুর্বেদিক উপাদান রয়েছে। এসব গাছের শিকড় বা পাতার রস মধুর সাথে

মিশিয়ে খেলে শরীরের সমস্ত ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গোলমরিচ ও মধু খাবার ফলেও হাঁটুর ব্যথা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমাদের হাঁটুর ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বা সারিয়া তোলার জন্য আমরা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিতে পারি। উক্ত চিকিৎসা গুলো করলে হাঁটুর ব্যথা আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে। তাই আমরা অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিতে পারি। তাহলে হাঁটু ব্যাথা কমে যেতে পারে।

হাঁটুর ব্যাথা কমানোর শাক সবজি

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর জন্য ঘরোয়া উপায় এর জন্য প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। এসব শাক-সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি ইত্যাদি যেগুলো খেলে শরীরের সমস্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে এবং অসুখ বিসুখ দূর করতে সাহায্য করে। অনেক ইউটিউব ভিডিও থেকে বা ফেসবুক থেকে আমরা অনেক শাকসবজি খাবার কথা শুনে থাকি কিন্তু আমরা সেগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে চলে যায়। 

ফলে আমাদের দৈনন্দিন সময়ে সমস্যা  পড়তে হয়। ব্যথা কমাতে যেগুলো সবজি বেশি করে খাওয়া উচিত সেগুলো হল, সবুজ সবজি গুলো যেমন বেগুন, করলা, পটল, ঢেঁড়স ইত্যাদি আরো অনেক। এসব সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও এন্টি অক্সিডেন্ট। যা ব্যথা কে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। কারণ সবুজ শাক-সবজিতে রয়েছে অন্যান্য শাক সবজির চাইতে অনেক পরিমাণে বেশি প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম। 

এই ধরনের শাকসবজি গুলো খেলে আমরা হাঁটু ব্যাথা সমস্যা সহ এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। এছাড়াও রসুন, গাজর, টমেটো, লাল মরিচ, হলুদ, আদা এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট প্রোপারটিজ রয়েছে। যা আমাদের শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে মনে রাখবেন সবজিগুলো রান্না করার সময় অধিক পরিমাণে তাপ সিদ্ধ করা যাবে না যাতে সব্জির পুষ্টি গুণাগুন টিকে থাকে। আর এভাবে খেলে আমাদের শরীর বা হাটু সমস্যায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

হাঁটুর ব্যাথা কমাতে বিশ্রাম করা

আজকাল হাঁটুর ব্যাথা খুব কমন একটি সমস্যা। বর্তমান সময়ে ৪০ ঊর্ধ্ব মানুষেরই বেশিরভাগ এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কারণ মানুষ এই যুগে এসে নিয়ম অনুযায়ী চলাফেরা করছে না, এবং তাদের খাবার ও বিশ্রাম বা কাজকর্মের ক্ষেত্রে অনেক অনিয়ম করে থাকে যার কারণে এই হাঁটু ব্যাথা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। হাঁটু ব্যাথা হলে আমরা অনেকেই ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিতে চলে যায়। এবং তারা এই সমস্যা সমাধানের জন্য সবচেয়ে প্রধান যেই কাজটি করতে বলে সেটি হল বিশ্রাম। 

হাঁটুর ব্যথা অনেকের অনেক দিন ধরে থাকছে। যা সারানোর উপায় কেউ খুঁজে পায় না এবং এর মধ্য দিয়ে তারা তাদের কাজকর্ম করে থাকে। সেই কারণে হাঁটু ব্যথা আরো বেড়ে যায়। তাই ডাক্তাররা প্রধান চিকিৎসা হিসেবে তাদেরকে বিশ্রাম করতে বলে। হাঁটু ব্যথা হলে অবশ্যই আমাদের ১৫ থেকে ১ মাসের বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। এতে করে দেখা যায় অনেকের কোন প্রকার ঔষধ ছাড়াই হাঁটুর ব্যাথা ভালো হয়ে যায়। 
হাঁটুর-ব্যাথা-কমাতে-বিশ্রাম-করা
এবং পাশাপাশি ঘরোয়া উপায় কিছু ব্যায়াম করতে হয় যেগুলো আপনারা সবাই জেনেছেন উপরের অংশ থেকে। তাই হাঁটু ব্যথার জন্য বিশ্রামের বিকল্প আর কিছুই হয় না। আপনি এই সমস্যার জন্য যতই বিশ্রাম নিবেন আপনার হাঁটু ব্যথার ক্ষেত্রে ততই ভালো ফলাফল আপনি পাবেন। তাই আমাদের মধ্যে যদি কারো হাঁটু ব্যথা হয়ে থাকে আমরা অবশ্যই বিশ্রাম নিবো। আর এই বিশ্রামের ফলে শরীরের সমস্ত ব্যথা ও ভালো হয়ে যেতে পারে।

হাটুর ব্যাথা সারানোর ঔষধ কি

হাঁটুর ব্যাথা এবং শরীরের আরো ব্যথা কমানোর জন্য বেশকিছু উপযুক্ত ঔষধ রয়েছে। তা আমরা অনেকেই জানিনা, আর না জানার কারণেই আমরা হুটহাট করে ডাক্তারের কাছে ছুটে যায়। তাই এইসব ওষুধগুলোর নাম এবং এর কাজগুলো কি তা আমাদের সকলের তাঁর জেনে রাখা ভালো। বিভিন্ন ধরনের ব্যথা বা হাটুর ফোলা কমানোর জন্য এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান সমৃদ্ধ ঔষধ যেমন ইবুপ্রোফেন, নাপ্রোক্সেন, ডিক্লোফেনাক ইত্যাদি ঔষধ গুলো

হাঁটুর ব্যথা সহ শরীরের অন্যান্য ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং হাটুর ফুলে থাকাও কমে যায়। এবং আরেকটি কার্যকরী ঔষধ হচ্ছে প্যারাসিটামল। এটি শরীরের ব্যথা বা ফুলে যাওয়া এবং জ্বর কমাতেও বিশেষ ভাবে কাজ করে থাকে প্যারাসিটামল। এটার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও খুব কম। তাই এটি ব্যথার কাজে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আবার হাঁটুর হার শক্ত করতে অস্টোক্যাল ডি, ভিটামিন ডি এবং রগের জন্য রয়েছে নিউরো বি ঔষধ যা হাড় ও রগকে খুব শক্তিশালী করে তোলে।  

তবে হ্যাঁ এই ঔষধ অবশ্যই এক মাসের পুরো ডোজ খেতে হবে। তাহলে আপনি হাঁটুর ব্যথায় বা রগেরও ব্যথায় অনেকটাই আরাম পেয়ে যাবেন। অনেক বিশেষজ্ঞরা এই ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এবং আপনার ব্যথা যদি তীব্র হয়ে যায় তাহলে আপনি ট্রামাডল ব্যবহার করতে পারেন। তবে ঔষধ গুলো ব্যবহার করার আগে আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। কারণ তারা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে ওষুধ দিয়ে থাকেন।

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঔষধ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

হাঁটু ব্যাথা সারানোর জন্য হয়তো আমরা অনেকেই অনেক রকম ওষুধ সেবন করে থাকি। কিন্তু আমরা কি জানি অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়ার ফলে কি কি ক্ষতি হতে পারে। যেকোনো ব্যাথা নাশক ওষুধের বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় যা আমরা না জেনে সেবন করে থাকি। তাই আমাদের জানা উচিত যে ব্যাথা নাশক ওষুধ খেলে কি কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ওষুধ খেলে গ্যাস্ট্রিক সহ পেট ব্যথা ও পেটের আলসারের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

অতিরিক্ত ওষুধ সেবন করলে কিডনিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। যারা আগে থেকেই কিডনি সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য এটি খুবই ক্ষতিকর। আবার এসব ব্যাথা নাশক ওষুধ খেলে রক্তের চাপ বেড়ে যায় ফলে হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ রোগের মত জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার অনেকের ওষুধ খাওয়ার ফলে এলার্জি ভাব বা গা ফুলে যাওয়া শ্বাসকষ্ট এসব সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও অতিরিক্ত ওষুধ খেলে লিভারের ওপর প্রভাব পড়তে পারে ।

এতে করে লিভার ইনফেকশন এর মত জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ব্যথা নাশক ওষুধ খাওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরী। তা না হলে পরবর্তী সময়ে অনেক জটিল সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। তবে ক্যালসিয়াম জাতীয় ও ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার বা ঔষধ পরিমাপ অনুযায়ী খাওয়া যেতে পারে। এতে করে আপনার হাঁটুর সমস্যায় কাজে আসতে পারে। তাই শুধু শুধু অতিরিক্ত ঔষধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

হাঁটু ফোলার কারণ কি ও কেনো হয়

হাটু ফুলে যার বেশ কিছু কারণ রয়েছে অনেকেরই অজানা আর না জেনে আমরা অযথা দুশ্চিন্তা করি। আসলে এটি কোন ভয়য়ের কারণ নয়। স্বাভাবিক মানুষেরও মাঝেমধ্যে বিভিন্ন কাজকর্মের ফলে হাঁটু ফুলে যেতে পারে। যেমন আঘাত বা চোট লাগার কারণেও হাটু ফুলে যেতে পারে। আঘাত বা চোট লাগার কারণে রক্ত সঞ্চালন কমে গিয়ে সেখানে রক্ত জমা হয়ে ফুলে যেতে পারে। এছাড়া লিগামেন্ট ইনজুরি হলে হাটু ফুলে যেতে পারে। 

কারণ হাটুর চারিদিকের মাসেলে ব্যথা হলে তখন তা ফুলে ওঠে। এবং অতিরিক্ত জার্নি করার ফলে পা ফুলে যেতে পারে বা পায়ের হাটুও ফুলে যেতে পারে। হাঁটুতে আস্তে আস্তে পানি জমে সেখানে ফোলা দেখা দেয়। অতিরিক্ত হাঁটু ফুলে যদি যটিল আকার ধারন করে তাহলে ডাক্তরের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নেওয়া খুবি জরুরি। তা না হলে পরবর্তী সময়ে মারাত্বক সমস্যা দেখা দিতে পারে। মহিলাদের মাসিক চলাকালিন সময়ে ,

হরমোন পরিবর্তন হলে হাঁটুতে পানি জমে গিয়ে ফোলাভাব হয়ে যেতে পারে। তাই এই সময়ে খুব সচেতন থাকা প্রয়োজন। এছাড়াও আরো নানা কারনে হাঁটু ফুলে যেতে পারে। এই বিষয়ে আমাদের খুব ভালো করে সবার জানা দরকার। কারণ হাঁটু ব্যাথা খুব কমন একটা সমস্যা। হাঁটু কোনো কারণে ফুলে গেলে সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া উপায় হচ্ছে গরম পানির সেক ও বরফের সেক দেওয়া। তাহলে এই হাঁটু ব্যাথা ভালো করা যেতে পারে। 

কাদের হাঁটু ব্যাথা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় জানতে চায় অনেকেই। কিছু কিছু মানুষের চলাফেরার অভ্যাসের কারণে হাঁটু ব্যাথা হয়ে থাকে। এটি এমন একটি সমস্যা যেটি ৪০ উর্ধ মানুষদের এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। অতিরিক্ত বয়স হয়ে গেলে বা বাস বাড়ার সাথে সাথে কারটিলেজ ক্ষয় হওয়া শুরু করে, যার ফলে তাদের হাঁটু ব্যথা সমস্যা দেখা দেয়। আবার যাদের অতিরিক্ত ওজন বেশি তাদের হাঁটু ব্যাথা সমস্যা হতে পারে। 

ওজন বেশি হওয়ার কারণে তার শরীরের সমস্ত ওজন হাটুর উপরে গিয়ে প্রভাব ফেলে। যার কারণে হাঁটু ব্যথা সৃষ্টি হয়। আবার যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম বা কাজ করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে এই হাঁটু ব্যাথা সমস্যা হতে পারে। আবার যাদের পায়ের বেশি খুব দুর্বল তাদের হাটু ব্যাথা হতে পারে। কারণ তাদের বেশি দুর্বল হওয়ার কারণে শরীরের সমস্ত ভর সরাসরি হাটুতে গিয়ে পড়ে তাই তাদের হাঁটু ব্যথা হয়। এছাড়াও যাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠনগত সমস্যা রয়েছে যেমন হাড় বাঁকা এরকম সমস্যা। 

তাদের ক্ষেত্রে ও হাটু ব্যথা হওয়ার খুব সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এখন থেকেই আপনারা নিয়মিত ব্যায়াম করবেন এবং সবকিছু নিয়মমাফিক করে চলাফেরা করলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।  এর পরেও যদি কেউ হাঁটু ব্যথার শিকার হয়ে থাকেন তাহলে ডাক্তারের কাছে স্বাস্থ্য পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন। তাহলে আপনার পরবর্তীতে এই সমস্যা অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কম থাকবে।

শেষকথা

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে এতক্ষণে হয়তো আপনারা পুরোপুরি বুঝতে পেরে গেছেন, যে কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে হাঁটুর ব্যাথা ভালো করা সম্ভব। এবার বর্তমানে খুবই প্রচলিত একটি সমস্যা তার জন্য আপনারা একদমই চিন্তিত না হয়ে, ঘরোয়া উপায় চিকিৎসা গুলো করতে থাকুন। দেখবেন আপনি একসময় খুব ভালো একটি ফলাফল পাবেন। এভাবে ঘরোয়া উপায়ে চিকিৎসা করলে আপনাকে আর অতিরিক্ত টেনশন করতে হবে না।

আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে কিভাবে হাঁটু ব্যথা সারানোর ঘরোয়া উপায় পাওয়া যায়। এবং আশা করছি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন এবং হাঁটু ব্যাথা সম্পর্কে অনেকটাই ধারণা পেয়েছেন। এবং কিভাবে তা সারানো যায় ঘরোয়া উপায়ে তা বুঝতে পেরেছেন। এই ধরনের পোস্ট আমরা প্রতিনিয়তই করে থাকি আমাদের এই অর্গানাইজ আইট থেকে। তাই আপনার প্রয়োজনীয় সব তথ্য পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url