লো প্রেসার হলে করণীয় কি এবং দ্রুত নিয়ন্ত্রণে যা করনীয়
লো প্রেসার হলে করণীয় কি এই বিষয়টি জানতে আজকে আপনি সঠিক আজকের প্রবেশ
করেছেন। বর্তমান সময়ে হাই প্রেসার এবং লো প্রেসারে অনেক রোগী ভুগছেন। আর এই লো
প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে অনেকেই ব্যর্থ হচ্ছে, ফলে তার পরবর্তী সময়ে মারাত্মক
ক্ষতি হচ্ছে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা লো প্রেসার সঠিক মাত্রায় ফিরে আনার ১০ টি টিপস
আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। এর থেকে আপনি লো প্রেসার আবার নিয়ন্ত্রণ করতে
পারবেন। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে আসি কি সেই ১০ টি টিপস।
পেজ সূচিপত্রঃ লো প্রেসার হলে করণীয় কি
- লো প্রেসার হলে করণীয় কি
- প্রেসার লো হওয়ার লক্ষণ
- প্রেসার লো হলে কি কি সমস্যা হয়
- প্রেসার লো হলে কি খেতে হবে
- লো প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় কি
- লো প্রেসারে কি স্ট্রোক হয়
- প্রেসার লো হলে কি ঔষধ খেতে হবে
- শেষকথা
লো প্রেসার হলে করণীয় কি
লো প্রেসার হলে করণীয় কি তা আমরা অনেকেই জানিনা। আর না জানার কারণেই মানুষজন
অনেক টাকা পয়সা নষ্ট করে ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছে, এবং স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর এমন ঔষধ সেবন করছেন। কিন্তু এমন কিছু করণীয় রয়েছে যা থেকে আপনার
লোকেশন আবার আগের মাত্রায় চলে আসতে পারে। লোকেশন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনি
দুই চামচ চিনির সাথে এক চামচ লবণ মিশিয়ে স্যালাইন বানিয়ে খেতে পারেন।
কারণ লবনে রয়েছে সোডিয়াম, আর এই সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। এবং
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা চিনি বাদে লবণ পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।
এছাড়াও সকালের খাবারের পর আপনি চাইলে এক কাপ কফি খেতে পারেন। কফিতে থাকা
ক্যাফেইন রক্তচাপ বাড়াতে পারে। আবার আপনি চাইলে বিটের রস খেতে পারেন। এই
বিটের রস হাই প্রেসার এবং লো প্রেসার দুটি উভয়কেই নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য
করে।
প্রয়োজনীয় পোষ্টঃ শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
এছাড়াও আপনি চাইলে সকালে খালি পেটে চিনা বাদাম ও কাঠবাদাম খেতে পারেন।
এছাড়াও পুদিনা পাতাতে রয়েছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি
উপাদানগুলো। আর এ সকল উপাদান শরীরের রক্তচাপ বাড়াতে সহায়তা করে। এবং আপনি
চাইলে দুধ ডিম, গরুর মাংস লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে খেতে পারেন। এ সকল
করণীয় গুলো করলে আপনার লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
প্রেসার লো হওয়ার লক্ষণ
প্রেসার লো হওয়ার লক্ষণ আমাদের প্রায় অনেকের অজানা। আর সে কারণে অনেকে এর
প্রতিকার না করতে পেরে সে স্টক করে মারা যায়। এর জন্য আমাদের জানা দরকার লো
প্রেসারের লক্ষণগুলো কি কি। কারণ প্রেসার কমেছে নাকি বেড়েছে তা জানার জন্য
আমরা সাধারণত ডাক্তারের কাছে গিয়ে প্রেসার মেপে পরীক্ষা করি। কিন্তু কিছু
উপসর্গের মাধ্যমে আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন আপনার প্রেশার বেড়েছে নাকি কমেছে।
যদি কারো পেশার লো হয়ে যায় তাহলে সে সাধারণত দুর্বল হয়ে পড়বে। এছাড়াও মাথা
ঝিমঝিম করবে এবং আপনি যখন চলাফেরা করতে যাবেন হঠাৎ করে হয়তো আপনার মাথা ঘুরে
উঠতে পারে। এই ধরনের লক্ষণ গুলো দেখা দিলে আপনি মনে করবেন আপনার প্রেশার
অতিরিক্ত কমে গেছে। এসব লক্ষণগুলো দেখা দিলে আপনি প্রেসার বাড়ানোর জন্য উক্ত
করণীয় গুলো লক্ষ্য করতে পারেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতেও
পারেন।
প্রেসার লো হলে কি কি সমস্যা হয়
লো প্রেসার হলে করণীয় কি এবং প্রেসার হলে কি সমস্যা হয় এই প্রশ্ন অনেকেরই।
আর এই লো প্রেসারের কারণে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। লো
প্রেসারের কারণে শরীরের রক্তচাপ কমে যায়, আর এর ফলে মাথা ঘোরা সমস্যা দেখা
দেয়। এবং রক্তচাপ কমে যাওয়ার ফলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিকভাবে কাজ
করে না। এবং এর ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এবং হার্টে রক্তের চাপ কমে
যাওয়ার ফলে বুক ব্যথাও হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ হৃদরোগের লক্ষন ও প্রতিকার
এছাড়াও রক্তচাপ কমে যাওয়ার কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন না নেওয়ার
কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এছাড়া মানসিক চাপ থেকে শুরু করে অনেক টেনশন হতে
পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত হাত ও পায়ের তালু ঘেমে যেতে পারে। এবং অতিরিক্ত
রক্তচাপ কমে যাওয়ার ফলে অনেকেই অঙ্গান হয়ে যেতে পারে। আর এই সমস্যা গুলো
মারাত্নক রুপ ধারন করার আগেই এর সঠিক চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
প্রেসার লো হলে কি খেতে হবে
প্রেসার লো হলে কি খেতে হবে তা অনেকেই না জেনে শুধু শুধু অনেক ঔষধ সেবন করে
নিজের শরিরের ক্ষতি করে থাকি। আর তাই আমাদের জানা উচিত লো প্রেসার হলে কি কি
খাবার গুলো খাওয়া উচিত। আমাদের শরিরে যখন সোডিয়ামের পরিমান কমে যায় তখনি লো
প্রেসার হয়ে থাকে। আর এর জন্য লবন পানি খাওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও ডিম, বাদাম এসব
খাবার গুলো লবন করে খাওয়া যায়।
অর্থাৎ এক কথায় বলা যায় সোডিয়াম যুক্ত খাবার গুলো খাওয়া উচিত এই সময়। এবং
সে যেটা হাইড্রেড ঠিক রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া প্রয়োজন। এবং
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার প্রচুর পরিমাণে খাওয়া উচিত। যেমন ডিম, ডাল, মাছ, মাংস
ইত্যাদি। এবং পুষ্টিকর ফল ফুল যেমন আপেল, পেঁপে, আমলকি, কলা এসকল ফলগুলোতে
প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে, যা দেহের রক্তচাপকে বাড়িয়ে দেয়।
এছাড়াও সরকার জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। এবং গোলমরিচ প্রচুর
পরিমাণে রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। আবার আপনি চাইলে মধুও খেতে পারেন।
মধুতে অনেক পুষ্টি রয়েছে যার ফলে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। এসব খাবারের
পাশাপাশি আপনি আপনার শরীরচর্চা করতে পারেন। এবং অতিরিক্ত কোন সমস্যা দেখা
দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
লো প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় কি
লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা চাইলে ঘরোয়া উপায়েও তা নিয়ন্ত্রণ করতে
পারি। ঘরোয়া উপায়ে লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে আপনি ঘরোয়া উপায়ে কফি
বানিয়ে খেতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন কেউ যদি চার
কাপ কফি খেতে পারে তাহলে তার লো প্রেসার থাকবে না। কারণ কফিতে আছে ক্যাফেইন,
আর ক্যাফেইন লো প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ক্যাফেইন যুক্ত
খাবার যেমন কফির পাশাপাশি চা, বিভিন্ন সফট খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়
এছাড়াও আপনার ঘরে যদি ওর স্যালাইন থাকে তাহলে আধা লিটার পানিতে একটি
স্যালাইন খেয়ে নিতে পারেন। এতে করে রক্তের সোডিয়াম কে বাড়িয়ে রক্তচাপ
বৃদ্ধি করবে। এবং আপনি চাইলে লবন পানীয় খেতে পারেন। এবং কাঠ বাদাম চিনা
বাদাম খেলেও রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। এছাড়াও কিসমিসের পাশাপাশি কিসমিস ভেজানো
পানি সকালে উঠে খেয়ে নিতে পারেন। এটাও আপনার রক্তচাপ বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
এসব ঘাড়া উপায় গুলো করলে আপনি নিজেই লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
লো প্রেসারে কি স্ট্রোক হয়
লো প্রেসার হলে করণীয় কি সেটা আমাদের অবশ্যই জানা দরকার। কারণ এই লো প্রেসার
থেকে অনেকেরই স্ট্রোক হয়ে যায়। যার ফলে অনেক রোগী এভাবে মারাও পর্যন্ত যায়।
সাধারণত লো প্রেসার স্ট্রোকের কোন কারণ নয়। কিন্তু লো প্রেসার এর কারণে শরীর
দুর্বল হয়ে যায় এবং রক্তের চাপ কমে যায়। আর এর ফলে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত
পরিমাণে রক্ত সঞ্চালন না হাওয়াই অক্সিজেনের অভাব হতে পারে। আর এসব কারণ গুলো
স্ট্রোকের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এছাড়াও লো প্রেসারের কারণে রক্তের চাপ কমে যাওয়ায় হার্টের সমস্যা দেখা দিতে
পারে। আর তাই লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের খুবই জরুরী। তা না হলে
পরবর্তীতে মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। এবং রক্তের চাপ কমে যাওয়ার কারণে অনেক
সময় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। আর এর কারণে স্ট্রোকের সৃষ্টি হতে পারে। তাই
আমাদের সব সময় সতর্কতা থাকা প্রয়োজন।
প্রেসার লো হলে কি ঔষধ খেতে হবে
লো প্রেসার হলে করণীয় কি তা আমরা এতক্ষণে প্রায় সবটুকুই জানতে পারলাম। এগুলো
ছাড়া লো প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করতে কিছু ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। যেগুলো ঔষধ
খেলে রক্তেচাপ বৃদ্ধি করবে। কিন্তু ওষুধ গুলো খাওয়ার আগে আপনাকে লো প্রেসারের
লক্ষণগুলো চিকিৎসকের কাছে উল্লেখ করা প্রয়োজন। তাহলে তারা সেই লক্ষণগুলোর উপর
ভিত্তি করে ওষুধ প্রদান করে থাকে। যাতে করে আপনার সঠিক চিকিৎসা তারা দিতে পারে।
তবে ওষুধের চাইতেও সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হল জীবন চলাচল। আপনার জীবন যাত্রা যদি
পরিবর্তন করতে পারেন তাহলে আপনি নিজেও ঘরোয়া উপায়ে লো প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ
করতে পারেন। কিন্তু এই বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে অনেকেই ঔষধের দিকে চলে যায়।
কিন্তু তারা সঠিক ঔষধ বেছে নিয়ে সেবন করতে না পারার কারণেও পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া বা অন্যান্য ক্ষতি হয়। নিচে লো প্রেসারের কিছু ঔষধের নাম উল্লেখ
করা হলো।
- এফিড্রিন
- মিডডোড্রিন
- ফ্লুডোকরটিসন
- এপিনেফ্রিন
- ক্যাফেইন
- অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট
শেষকথা
লো প্রেসার হলে করণীয় কি আশা করি আপনি তা বুঝতে পেরেছেন। লো প্রেসার হলে কি
করতে হবে এবং কি খেতে হবে তা নিশ্চয়ই পুরোপুরি ধারণা পেয়েছেন এবং উপকৃত
হয়েছেন। হাই প্রেসার এবং লো প্রেসার দুটিই আমাদের নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। এ
ধরনের সকল তথ্য আপডেট পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইট টিকে ফলো দিয়ে রাখতে পারেন। আমরা
প্রতিনিয়তই সুস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয় নিয়ে পোস্ট পাবলিশ করে থাকি, ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url