নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার জানার জন্য আজকে আপনি সঠিক আর্টিকেলে প্রবেশ
করেছেন। এই নিউমোনিয়া রোগটি অনেক মারাত্মক একটি রোগ। কিন্তু এটি কেন হয় এবং
নিউমোনিয়া হলে কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় সেটা আমরা অনেকেই জানিনা।
আর তাই আপনাদের কথা চিন্তা করে আজকের এই আর্টিকেলটি সাজিয়েছি আপনাদের জন্য। এই
আর্টিকেলটির মধ্যে নিউমোনিয়া কেন হয় এবং নিউমোনিয়া থেকে কিভাবে বাঁচা সম্ভব
তার সমস্ত বিষয় উল্লেখ করেছি। আর তাই আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার
জন্য।
পেজ সূচিপত্রঃ নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
- নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
- নিউমোনিয়া কি জনিত রোগ
- নিউমোনিয়া কেন হয়
- বড়দের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ
- শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ
- নিউমোনিয়ার টিকা কখন দিতে হয়
- নিউমোনিয়া হলে কি কি খাওয়া উচিত
- শেষকথা
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আমাদের প্রায় অনেকেরই অজানা।
কিন্তু এর লক্ষণ গুলি বোঝা অনেক সহজ। কিন্তু আমাদের মধ্যেই অনেকেই জানিনা এর
লক্ষণ কি এবং কিভাবে এর থেকে বাঁচা সম্ভব বা নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা যায় তা
জানি না। নিউমোনিয়া হলে সাধারণত কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট এবং বুক দেবে
যায়। সাধারণত এসব লক্ষণগুলো দেখা দেয় এই প্রাণঘাতী নিউমোনিয়া হলে।
আরো পড়ুনঃ ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে
যার ফলে অনেকেই সহজেই বুঝতে পারে এবং খুব দ্রুত এর চিকিৎসা নিতে পারে। আর এই
নিউমোনিয়ার প্রতিকার খুব বিস্তৃত। আর তাই এই নিউমোনিয়া সহজেই প্রতিকার করাও
সম্ভব। আমাদের দেশে নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন এবং এর অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ
রয়েছে। এছাড়াও ছোটদের মাতৃদুধ পান, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থাকা, বায়ু দূষণ
থেকে দূরে রাখা। এভাবেও নিউমোনিয়া প্রতিকার করা সম্ভব।
নিউমোনিয়া কি জনিত রোগ
নিউমোনিয়ার কি জনিত রোগ আপনি কি তা জানেন। নিউমোনিয়া হলো আমাদের ফুসফুসের
একটি ইনফেকশন জনিত রোগ। এবং বিস্তারিত বলতে গেলে আমাদের ফুসফুসের মধ্যে অনেক
বায়ুথলি আছে। সেখানে বাতাস জমে এবং বের হয়। কিন্তু নিউমোনিয়ার ফলে এই
বায়ুথলি গুলোকে রক্ত ও জমা করে ব্লক করে দেয়। এবং ফুসফুসের উপর চাপ পড়ে।
এবং সেই কারণে নিউমোনিয়া হলে শ্বাসকষ্ট এবং কাশি হয়।
এছাড়াও এসবের পাশাপাশি জ্বর এবং বুকে চাপ ধরে থাকার মত অবস্থা হতে পারে। এবং
কোন শিশুর যদি নিউমোনিয়া হয় তাহলে সে আগের তুলনায় খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে
দেবে বা খেতে চাইবে না। এ সকল সমস্যা গুলো হলে বুঝে নিবেন আপনার বা আপনার
শিশুর নিউমোনিয়া হতে পারে। এবং নিউমোনিয়া একটি সংক্রমণ। রোগ। একজন
নিউমোনিয়া রোগের থেকে আরেকজনের কাছেও এই রোগ ছড়াতে পারে।
নিউমোনিয়া কেন হয়
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং এর পাশাপাশি নিউমোনিয়া কেন হয় এটাও
হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আমাদের শারীরিক জীবনকে সুস্থ সবল রাখতে আমাদের
জানা উচিত কেন এই রোগটি হয়। শীত আসলে আমাদের দেশে অনেক অসুখ-বিসুখ বেড়ে যায়।
আর এই শীতে বিশেষ করে শিশুদের খুব ঝুঁকিপূর্ণ একটি রোগ হচ্ছে নিউমোনিয়া। এবং এ
রোগে ছোট-বড় সবাই আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু এদের মধ্যে শিশু এবং বয়স্কদের
বেশি এই নিউমোনিয়ার সমস্যা দেখা যায়।
গুরুত্বপূর্ণ পোষ্টঃ হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয়
এবং শীতে বা আবহাওয়া পরিবর্তনকালে এই সমস্যা দেখা যায়। ছোট বাচ্চাদের সাধারণত
বেশি বেশি কাশি, জ্বরের মাত্রাটা অনেক বেশি, এবং অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
এসব হলে শিশুর নিউমোনিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে দেখা যায়
হঠাৎ করে অনেক জ্বর আসে। এবং তার অনেক ঠান্ডা লাগতে পারে। এবং কিছুদিনের জন্য
কাশিও হতে পারে। আর এসবের জন্য বয়স্কদেরও নিউমোনিয়া হয়ে থাকে।
বড়দের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ
বড়দের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ শিশুদের চাইতে একটু ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ গুলো হল কাশি, অধিক মাত্রায় জ্বর হওয়া, শ্বাসকষ্ট
হওয়া, বুকে ব্যথা করা ইত্যাদি। এবং এ সকল সমস্যা গুলো দেখা দিলে অতি দ্রুত
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিন্তু বড়দের লক্ষণগুলো একটু আলাদা হতে
পারে। যেমন বড়দের প্রথমেই কাশির সমস্যা হতে পারে, এবং কাশির সাথে রক্ত বের
হতে পারে।
এবং জ্বর হঠাৎ করে আসতে পারে যা অধিক মাত্রায় হতে পারে। এবং তার শ্বাস নিতে
কষ্ট হবে এবং সেই সাথে সাথে হাপিয়ে উঠতে পারে। এবং সে অত্যন্ত দুর্বল এবং
ক্লান্ত হয়ে পড়বে। এবং শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে অধিক মাত্রায় ব্যথা করবে।
এ ছাড়া মাথাব্যথা, বমি হওয়া সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে বড়দের নিউমোনিয়া
হলে। আর এ সকল সমস্যাগুলো দেখা দিলে অতি তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
উচিত।
শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার করার আগে প্রত্যেক মা-বাবার জানা উচিত যে
শিশুর নিউমোনিয়া হলে এর লক্ষণ গুলো কি কি হতে পারে। তাহলে প্রত্যেক শিশুইকেই
দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে নিউমোনিয়ার হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব। সর্দি-কাশি এর সাথে
সাধারণত জ্বর থাকে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যে যার নাও থাকতে পারে,
আর থাকলেও বোঝা যায় না। এসব নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুকে ঔষুধের মাধ্যমে
চিকিৎসকেরা অতি দ্রুত নিউমোনিয়া থেকে সুস্থ করে তোলে।
আবার কিছু বাচ্চার সর্দি কাশি এর পাশাপাশি শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও সমস্যা হয়।
এবং কিছু কিছু বাচ্চা দেখা যায় আগের তুলনায় অনেক খাওয়া কমায় দিছে বা খেতে
চাচ্ছে না। এবং এর ফলে চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন এবং বাচ্চাটিকে সুস্থ করে
তোলেন। আর তাই আপনার বাচ্চার এরকম লক্ষণ দেখা দিলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ
নিবেন। তাহলে আপনার শিশুটি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
নিউমোনিয়ার টিকা কখন দিতে হয়
নিউমোনিয়ার টিকা কখন দিতে হয় তা কি আপনি জানেন। যদি না জানা থাকে তাহলে এই
বিষয়টিও যেন আপনার জন্য প্রয়োজন। এই টিকা নিউমোনিয়া থেকে বাঁচার জন্য বা
ঝুঁকি কমাতে টিকাটি দেওয়া হয়ে থাকে। এবং এমন কিছু বয়সী মানুষ আছে বা
দুর্বল অবস্থা রয়েছে তাদের জন্য এই টিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এই
নিউমোনিয়ার টিকা সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন পূরক শ্বাসযন্ত্রের
সংক্রমণ ও ফ্লু সংক্রমণ।
আরেকটি পোষ্টঃ শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
শিশুদের জন্য এই টিকা ১৫ মাসের মধ্যে চারটি ডোজ হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে। এবং
বয়স্কদের জন্য ৬৫ বছরের পর একবার দেওয়া হয়ে থাকে। এই টিকা নিউমোনিয়া হলে
এবং নিউমানিয়ার আগে নেওয়ার গুরুত্ব অনেক। এই টিকা নিউমোনিয়াকে অনেক দূরে
রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। আর তাই
নিউমোনিয়ার এই টিকা প্রদান করা হয়ে থাকে।
নিউমোনিয়া হলে কি কি খাওয়া উচিত
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার করতে হলে আমাদের কিছু পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ
করা উচিত। কারণ নিউমোনিয়া একটি মারাত্মক সংক্রমণ যুক্ত রোগ। এই রোগে
শিশু এবং বড় মানুষেরও শরীর অনেক দুর্বল করে ফেলে। আর তাই এই রোগের সাথে লড়াই
করার জন্য আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে হবে। আর তাই বিশেষ
কিছু খাবার নিয়মিত বেশি বেশি গ্রহণ করা উচিত। এই খাবারের মাধ্যমেও অনেকটাই
সুস্থ হয়ে যেতে পারেন নিউমোনিয়া থেকে।
নিউমোনিয়া হয়ে থাকলে সবুজ শাকসবজি ফলমূল ও স্যুপ তৈরি করে খেতে পারেন। সব
এছাড়া নরম জাতীয় খাবার যেমন খিচুড়ি পাউরুটি এগুলো খেতে পারেন। কারণ এগুলো
সহজেই পেটে যায়। এবং আপনার শরীরটাকে প্রাণের ঘাটতি না থাকে তার জন্য
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এবং কঠিন সমৃদ্ধ খাবার মাছ, দুধ, ডিম
এগুলো খাবার খেতে হবে। এবং ভিটামিন সি যুক্ত খাবারা যেমন পেয়ার, কমলা, আমলকি,
আনারস, পেপে খাওয়া উচিত।
শেষকথা
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে হয়তো এতক্ষণে আপনি বুঝতে পেরেছেন।
নিউমোনিয়া একটি প্রাণঘাতী রোগ। আর এই নিউমোনিয়া থেকে বাঁচতে ছোটদের এবং
বয়স্কদের খুব সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এবং এটি সংক্রমণ রোগ হওয়ায় বাকি সুস্থদেরও
সাবধানে থাকা প্রয়োজন। কারণ একজনের থেকে আরেকজনের হয়ে যেতে পারে নিউমোনিয়া। আর
এই নিউমোনিয়া হলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন এবং নিউমোনিয়া সম্বন্ধে সকল
অজানা তথ্য পেয়েছেন। আপনার যদি আরো অজানা তথ্য থেকে থাকে তাহলে আমাদের এই
ওয়েবসাইটে ফলো রাখতে পারেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url